নিউইয়র্কে বিপার শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব আলোকিত করলেন ইমরান
নিউইয়র্কের জামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টার রোববার সন্ধ্যায় পরিণত হয়েছিল শাস্ত্রীয় নৃত্যের এক উজ্জ্বল মিলনমেলায়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা) আয়োজিত এ উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বাংলাদেশের নবপ্রজন্মের নৃত্যশিল্পী এস. এম. হাসান ইশতিয়াক ইমরান। তাঁর সাবলীল নৃত্য, শক্তিময় মুদ্রা আর লয়ের নিখুঁত ব্যবহারে মুগ্ধ হন প্রবাসী বাঙালি দর্শকরা।
তিন ঘণ্টার এই বর্ণিল আয়োজনে ভরতনাট্যম, কত্থক, মনিপুরীসহ নানা ধ্রুপদী ধারার নৃত্য পরিবেশিত হয়। তবে সন্ধ্যার সবচেয়ে উচ্ছ্বাসময় মুহূর্ত তৈরি করেন ইমরান তাঁর একক কত্থক পরিবেশনায়। জয়পুর ও লক্ষ্ণৌ ঘরানার সমন্বয়ে তাঁর নৃত্যশৈলী, পায়ের ঝংকার ও গতি–লয়ের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ দর্শকদের মুগ্ধ করে।
মঞ্চে পরিবেশনার বাইরে এবারের শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ইমরান। তিনি পরিচালনা করেন এক মাসব্যাপী নিবিড় শাস্ত্রীয় নৃত্য কর্মশালা, যেখানে শিক্ষার্থীরা কঠোর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে লয়, তালি, অভিব্যক্তি, রেপার্টরি ও কথকের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো শেখে। কর্মশালার শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত পরিবেশনা তাদের শেখার অগ্রগতি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
শাস্ত্রীয় নৃত্যে অবদান এবং নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার প্রতি নিষ্ঠার স্বীকৃতিস্বরূপ বিপার পক্ষ থেকে ইমরানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিপার সংগীত শিক্ষক সেলিমা আশরাফ তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। আয়োজকেরা জানান, এই সম্মাননা শুধু একজন শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নয়—বাংলাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যের আন্তর্জাতিক অগ্রযাত্রার প্রতীক।
ইশতিয়াক ইমরান ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কত্থকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগে প্রভাষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ভারত, রাশিয়া, জাপান, তুরস্ক, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও কোরিয়ার নানা উৎসবে তিনি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বিনোদন ডেস্ক