ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় টানা প্রবল বর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৩ জনে পৌঁছেছে। এতে এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। গত এক সপ্তাহে দেশটির বহু অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন, তবে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। খবর আল জাজিরার। 

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি) শনিবার (২৯ নভেম্বর) জানায়, সুমাত্রার বিভিন্ন জেলায় উদ্ধারকারীরা নতুন করে মরদেহ উদ্ধার করায় নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা ৩০৩ জনে পৌঁছেছে। নিখোঁজ রয়েছে ১০০–এর বেশি। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ মানুষ।

সংস্থার প্রধান সুহারিয়ানতো জানান, এখনও দূরবর্তী এলাকায় আটকে থাকা অনেক মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়নি, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পশ্চিম সুমাত্রা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র ইলহাম ওয়াহাব শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) জানান, শুধুমাত্র পশ্চিম সুমাত্রাতেই ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন, ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা এক লাখ ছয় হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত পশ্চিম সুমাত্রায় ৬১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে; নিখোঁজ রয়েছেন ৯০ জন। পরে উত্তর সুমাত্রায় ১১৬ জন, আচেহ প্রদেশে ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ।

ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে ভারি বৃষ্টিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিন দেশে মোট প্রায় ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ডে শুক্রবার পর্যন্ত ১৪৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে; বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রতিবেশী মালয়েশিয়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত দুইজনের।

ইন্দোনেশিয়ায় টানা বর্ষণ থামলেও বিপর্যস্ত এলাকায় এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। নদীর পানি উপচে উঠে উত্তর সুমাত্রার বেশ কয়েকটি পাহাড়ি জনপদ প্লাবিত করেছে, ভেসে গেছে বাড়িঘর, মানুষ ও পশুপাখি। বহু এলাকায় সড়ক ও সেতু ধ্বংস হয়ে উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় তাপানুলি জেলা এবং আশপাশের দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ পাঠাতে বিমানযোগে সরবরাহ পাঠানো অব্যাহত রয়েছে, তবে ভেঙে পড়া সেতু, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা এবং যন্ত্রপাতির সংকটের কারণে উদ্ধার অভিযান ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

দুর্যোগকবলিত অঞ্চলগুলোর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির পথে থাকলেও মৃত্যুসংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।