চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাকিস্তানের সহায়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে (সাপ্লাই চেইন) চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে চীনা প্রভাব মোকাবিলায় খনিজ খাতে পাকিস্তানের সহযোগিতা চাইছে দেশটি। এ লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ফোরামের (সিএমএফ) উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদে বৈঠক করেছে। খবর ডনের।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সিএমএফের প্রেসিডেন্ট রবার্ট লুই স্ট্রেয়ার দ্বিতীয়। অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব এবং তার দল। এ সময় রবার্ট লুই খনিজ ও খনন খাতে সহযোগিতা, সরবরাহ শৃঙ্খলের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং পাকিস্তানে দায়িত্বশীল বিনিয়োগ উৎসাহিত করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার জন্য চীনের এই আধিপত্যকে একটি সুপরিচিত হুমকি হিসেবে দেখছে ওয়াশিংটন। স্ট্রেয়ারের মতে, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ আধুনিক অর্থনীতি এবং সামরিক প্রযুক্তির মূল ভিত্তি, যা যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি পর্যন্ত সব কিছুতেই অপরিহার্য।
সিএমএফ প্রেসিডেন্ট রবার্ট স্ট্রেয়ার উল্লেখ করেন, সরকারি ভর্তুকি, নিয়ন্ত্রণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে শিথিল নিয়ন্ত্রণের কারণেই চীন এই আধিপত্য বিস্তার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের প্রতিশোধ নিতে চীন গ্রাফাইট এবং অ্যান্টিমনির মতো উপকরণের রপ্তানিতে কড়াকড়ি করেছে। যা তাদের খনিজ সম্পদকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার প্রয়াসকে প্রমাণ করে।
চীন থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে পাকিস্তানকে একটি বিকল্প সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। সিএমএফ বিশেষ করে তামা এবং অ্যান্টিমনির মতো বিরল ও বিশেষায়িত ধাতুগুলোর ওপর মনোযোগ দিয়েছে। স্ট্রেয়ার পাকিস্তানকে প্রযুক্তি হস্তান্তর, মেধা সম্পত্তির সুরক্ষা এবং মার্কিন বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি পাকিস্তানের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী প্রতিভাগুলোকে একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হিসেবে স্বীকার করে পাকিস্তানকে ‘ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উন্নয়নের কেন্দ্র’ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।
জবাবে অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব জানান, পাকিস্তান খনিজ খাতে গুরুত্বপূর্ণ আইনি ও নিয়ন্ত্রক সংস্কারের কাজ করছে। পাকিস্তানের খনিজ খাতটি দেশকে ‘ভোগ-নির্ভর চক্র থেকে রপ্তানি-নেতৃত্বাধীন প্রবৃদ্ধির’ দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তিনি মার্কিন প্রতিনিধিদলকে একটি বিস্তারিত কাঠামোর প্রস্তাব নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাকিস্তান দায়িত্বশীল বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক