কেন দেশের হয়ে খেলছেন, জানালেন হামজা
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে এখন বাংলাদেশে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। শিকড়ের টানেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন লেস্টার সিটির এই ফুটবলার। তার আগমনে বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল নিয়ে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসটাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। হামজা জানিয়েছেন, শুধু পেশাদার ক্যারিয়ারের জন্য নয়, বরং হৃদয়ের টান ও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় তেজগাঁওয়ে মোবাইলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা পিএলসি এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে হামজাকে এক বছরের জন্য শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ঘোষণা করে।
সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হামজা জানান, বাংলাদেশের হয়ে খেলা তার জন্য এক বিশেষ অনুভূতির। লাল-সবুজের জার্সির প্রতিনিধি হতে পেরে গর্বিত তিনি। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মাধ্যমে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চান লেস্টার সিটিতে খেলা এই ফুটবলার।
হামজা বলেন, ‘আমার বাবা এই দেশে জন্মেছেন। এখানে বড় হয়েছেন, তাই তাদের মুখে সেই হাসি দেখতে পাওয়াটাই আমার আসল প্রাপ্তি। প্রতিটি সন্তানই চায় তার বাবা-মাকে গর্বিত করতে, আর আমি মনে করি আমি ভাগ্যবান যে, আমি পুরো জাতিকেই গর্বিত করতে পারি।’
দেশের ফুটবলে নিজের সামর্থ্যমতো অবদান রেখে দেশের ফুটবলের উন্নতি করার জন্যই বাংলাদেশের হয়ে খেলতে এসেছেন জানিয়ে হামজা বলেন, ‘আমি টাকার কথা আলাদাভাবে চিন্তা করি না। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও কীভাবে দেশের ফুটবলের উন্নত করতে পারি, সেটাই মূল বিষয়। সেই উন্নতিতে নিজের সামর্থ্যমতো অবদান রাখাই বাংলাদেশের হয়ে খেলার অন্যতম কারণ।’
দেশ তো বটেই দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেই সবচেয়ে বড় তারকা হামজা চৌধুরী। তার আগমনে দেশের ফুটবলের উন্মাদনা ছুঁয়ে যায় তাকেও। হামজাকে একনজর দেখতে স্টেডিয়ামের বাইরে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। ম্যাচের টিকিট শেষ হয়ে যায় ৬ মিনিটের মধ্যেই। এই ভালোবাসা নিজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন এই মিডফিল্ডার।
হামজা বলেন, ‘আমি যে ভালোবাসা পাই, সেটা আমি খুব ভালোভাবে লালন করি। আমি চেষ্টা করি সেই ভালোবাসা ও সমর্থনটা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে। যখনই আমি বাংলাদেশ ছাড়ি, আমার বাচ্চারা বলে তারা বাংলাদেশে ফিরতে চায়। তাই ইনশাআল্লাহ, তারা মার্চে আবার ফিরে আসবে।’
হামজার আগমনে বদলে যেতে শুরু করেছে জাতীয় দলের চিত্র। ফুটবলারও চেষ্টা করেন নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিতে। শুধু জাতীয় দল নয়, তরুণ ফুটবলাররাও অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন হামজাকে দেখে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ফুটবলারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করতে মুখিয়ে আছেন তারা।
হামজা বিশ্বাস করেন, শুধু দেশের বাইরে থেকে নয়, দেশ থেকেও আমরা অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসবে। হয়তো একদিন তারাও ইউরোপে খেলবে। একসঙ্গে দেশের ফুটবলকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
নভেম্বরের ফিফা উইন্ডেতে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মাঠে নামবেন হামজা অ্যান্ড কোং।

স্পোর্টস ডেস্ক