Skip to main content
NTV Online

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ
  • অ ফ A
  • রাজনীতি
  • সরকার
  • অপরাধ
  • আইন ও বিচার
  • দুর্ঘটনা
  • সুখবর
  • অন্যান্য
  • হাত বাড়িয়ে দাও
  • মৃত্যুবার্ষিকী
  • শোক
  • কুলখানি
  • চেহলাম
  • নিখোঁজ
  • শ্রাদ্ধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • বাংলাদেশ
  • আইন ও বিচার
জাকের হোসেন
১৪:৩০, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৫:৪১, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
জাকের হোসেন
১৪:৩০, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৫:৪১, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আরও খবর
জকসু নির্বাচন : ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী রাকিব জিএস খাদিজা
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে ভারতের প্রতিক্রিয়া
শেখ হাসিনা-কামালকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের আহ্বান : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শেখ হাসিনা-কামালের সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
আমার ছেলের খুনি হাসিনার রায় দ্রুত কার্যকর চাই : আবু সাঈদের বাবা

একজনকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার?

জাকের হোসেন
১৪:৩০, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৫:৪১, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
জাকের হোসেন
১৪:৩০, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৫:৪১, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই অভ‍্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের হত‍্যার পরও মরদেহের ওপর নৃশংতা চালিয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মৃত‍্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও মরদেহের ওপর একের পর এক গুলি, আহতদের চিকিৎসায় বাধা, আহতদের ক্ষতস্থানে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে যন্ত্রণা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের এক এসআইয়ের ছেলেকে হত‍্যার পর তার শরীরে ২০০ গুলি করা হয়। সন্তান হারানো সেই পুলিশ কর্মকর্তা তার ঊর্ধ্বতনদের বলেছিলেন, একজনকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার?

জুলাই অভ‍্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাধিক সাক্ষী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছেন। ক্ষমতাচ‍্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে তারা ওই সাক্ষী দেন।

একজনকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার?

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইমের বড় ভাই রবিউল হাসান (২৫) ট্রাইব‍্যুনালে জবানবন্দিতে বলেন, আমি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ১৬ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলে। ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’, ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যায়িত করেন। ফলে আন্দোলন বেগবান হয়। আমি সিলেটে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি।

রবিউল হাসান ট্রাইব্যুনালে আরও বলেন, আমার ছোট ভাই ইমাম হাসান ভুঁইয়া তাইম যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ১৬ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত সে আন্দেলনে অংশগ্রহণ করে। আমার মা তার ব্যাগ নিয়ে কাছাকাছি বসে থাকত। ১৯ জুলাই রাতে সরকার কারফিউ জারি করে। ২০ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। আমার ভাই মাকে চা খাওয়ার কথা বলে বাসার বাইরে চলে যায় এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ওই সময় তাকে আমি দুই বার কল দিয়েছি, কিন্তু সে রিসিভ করেনি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাই। আনুমানিক দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আম্মুকে ফোন দিই। সেই ফোন আব্বু রিসিভ করে জানান, বাড়িওয়ালা মাকে বলেছে, তায়িম গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমার আম্মা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে কাজলা ফুটওভার ব্রিজের পাশে তাইমের জুতা ও রক্ত দেখতে পান। সেখানে থাকা লোকজন আমার মাকে জানায়, আপনার ছেলেকে ভ্যানে করে পুলিশ যাত্রাবাড়ী থানার দিকে নিয়ে গেছে।’

‘আমি তাইমের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর খালা মোসাম্মদ শাহিদা আক্তারকে জানাই। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে খোঁজাখুঁজির পর তাইমকে না পেয়ে তিনি লোকজনকে তাইমের ছবি দেখান। তখন একজন সাংবাদিক বলেন, তাকে (তাইম) মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। পরের দিন আমার বাবা হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ গ্রহণ করেন এবং গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যান। আমি সিলেট থেকে কুমিল্লা গ্রামের বাড়িতে যাই। সেখানে ২১ জুলাই আনুমানিক রাত ১০টায় তার মরদেহ দাফন করা হয়। আমার আব্বার কাছ থেকে জানতে পারি, আমার ছোট ভাইয়ের শরীরে ২০০টির মতো ছররা গুলি লেগেছিল।’

রবিউল হাসান ট্রাইব্যুনালকে আরও বলেন, বাবা পুলিশে চাকরি করেন। তাইমের বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে পারি, পুলিশ যখন টিয়ার গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং গুলি করে, তখন সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তাইম তার দুজন বন্ধুসহ একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সেখান থেকে তাদের তিনজনকে টেনে বের করে এবং বেধড়ক মারধর করে। পুলিশ তাদেরকে গালি দিয়ে দৌড় দিতে বলে। তাইম প্রথমে দৌড় দেয়। তখন তাইমের পায়ে একজন পুলিশ সদস্য গুলি করে। সে পেছন ফিরে তাকালে তখন তার শরীরের নিম্নাংশে আরেকটি গুলি করা হয়। গুলিটি সামনের দিকে প্রবেশ করে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। তাইমকে শটগান দিয়ে আরও অনেক গুলি করা হয়। তখন তার বন্ধু রাহাত তাকে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল তাকে বাঁচানোর উদ্দেশে। তখন পুলিশ রাহাতকেও গুলি করে এবং তাকে বাধ্য করে তাইম ফেলে রেখে যেতে। রাহাত চলে যাওয়ার পরও আধা ঘণ্টা পর্যন্ত তাইম ওখানে পড়ে ছিল। তাইম ওখানে পড়ে কাতরাচ্ছিল এবং আকুতি করছিল—আমাকে বাঁচান বাঁচান বলে। সাংবাদিকসহ উপস্থিত অনেকেই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তাকে নিতে দেয়নি। বরং তারা তার মৃত্যু উপভোগ করছিল। ওখান থেকে ২০ গজের মধ্যে রাস্তার দুপাশে দুটি হাসপাতাল ছিল। আধা ঘণ্টা পরে পুলিশ ভ্যানে করে তাকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে নিয়ে মাটিতে নামিয়ে পাঁচ-ছয়জন পুলিশ বুট দিয়ে তাকে মাড়িয়ে তার চেহারা বিকৃত করে ফেলে। তাদের মধ্যে ছিল এডিসি শামিম, এডিসি মাসুদুর রহমান মনির ও এসি নাহিদ। যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) সাজ্জাদুজ্জামান প্রথম পায়ে গুলি করেন। পরে এডিসি শামিম আরেকজনের হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে তাইমের শরীরের নিম্নাংশে গুলি করেন। পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন অনেকবার গুলি করে। ঘটনাস্থলে তখন জয়েন্ট কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, জয়েন্ট কমিশনার প্রলয়, ডিসি ইকবাল, এডিসি মাসুদুর রহমান মনির, এসি নাহিদ, এসি তানজিল, ওসি আবুল হাসান, পরিদশৃক (অপারেশন) ওয়াহিদুল হক মামুনসহ ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য ছিল’, যোগ করেন রবিউল। পরে কেউ একজন তাকে ভ্যানযোগে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তারা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

রবিউল হাসান ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘২৮ জুলাই আমরা প্রথমে পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের কাছে গিয়েছিলাম মামলা করার জন্য। তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তারপর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম, থানায় মামলা নেয়নি। সেখান থেকে আমাদের ডিসি (ওয়ারী) ইকবালের অফিসে নিয়ে যায়। ডিসি আমাদের মামলা নেননি। তিনি বলেছিলেন, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে, এতে আমরা রাজি হইনি।’

রবিউল হাসান ট্রাইব‍্যুনালে জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমার বাবা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া। আমার ছোট ভাইকে হত্যার পর বাবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, একজনকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার? আমার ছেলের কি দোষ ছিল? কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে ২০০ গুলি মারা হলো?’

জবানবন্দিতে রবিউল বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীর সে সময়ের কয়েকটি ভিডিওতে তায়িম ও ছাত্র-জনতার ওপর মুহুর্মুহু নৃশংসভাবে গুলি করতে দেখা যায়। আমার ভাইকে গুলি করা সংক্রান্ত ভিডিও সংবলিত পেনড্রাইভ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করলাম। এ পর্যায়ে সাক্ষী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশে আমার ভাইসহ আন্দোলনকারী প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়। আমি তাদের ফাঁসি চাই’, যোগ করেন রবিউল হাসান।

ইবনে সিনায় পুলিশ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের চিকিৎসায় অবরোধ 

ইবনে সিনা হাসপাতালের ডা. হাসানুল বান্না (৪৩) ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, আমি ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কল্যাণপুরে ২০১৯ সাল থেকে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছি। ১৮ জুলাই দুপুরের পর থেকে আমাদের হাসপাতালে অসংখ্য আহত ব্যক্তি এলে আমরা চিকিৎসা প্রদান শুরু করি, যাদের মধ্যে অনেকের অপারেশন করতে হয়েছে। ১৮ জুলাই সন্ধ্যার পর পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে এসে চিকিৎসা প্রদানে বাধা প্রদান করে এবং রোগী ভর্তি করতে নিষেধ করে। রোগীর ভর্তি রেজিস্ট্রার চেক করে এবং রোগীদের তালিকা নিয়ে যায়। ১৯ জুলাই সকাল থেকে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হাসপাতালের গেট অবরোধ করে চেয়ার নিয়ে সারা দিন বসে ছিল।

ডা. হাসানুল বান্না আরও বলেন, ‘কোনো রোগী হাসপাতালে ঢুকতে দেয়নি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সেদিন তারা হাসপাতালে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেয়নি এবং বের হতেও দেয়নি। আমাদের হাসপাতালের টেকনোলোজিস্ট মিতুর স্বামী মোস্তাকিন বিল্লাহ, যিনি ইনোভা ডায়াগোনেস্টিক সেন্টারে টেকনোলোজিস্ট ছিলেন, মিরপুর ১০নং গোল চত্বরে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে বিকল্প পথে এনে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার জরুরি অপারেশনের প্রয়োজনে নিউরো সার্জন আনার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর প্রয়োজন হলেও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেয়নি; পরবর্তী সময়ে তাকে বিকল্প পথে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়নি। পরে তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালের ধানমণ্ডি শাখায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

হতাহতদের বেশিরভাগের মাথায় খুলি ছিল না

ট্রাইব্যুনালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের নিউরোট্রমা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান তার জবাবনবন্দিতে বলেন, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই থেকে গুলিবিদ্ধ রোগী আসতে থাকে। রোগীদের মাথায়, হাতে, পায়ে, পিঠে, মুখে, গলায় গুলি ও পিলেট বিদ্ধ ছিল। ৪ ও ৫ আগস্ট আসা রোগীদের বেশিরভাগের মাথায়, বুকে, মুখে ও গলায় গুলিবিদ্ধ ছিল, বেশিরভাগের মাথার খুলি ছিল না। একপর্যায়ে ডিবির লোকেরা এসে নতুন গুলিবিদ্ধদের ভর্তি না করার জন্য আমাকে চাপ দেয়।

ডা. মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘১৮ জুলাই থেকে গুলিবিদ্ধ রোগী আসতে থাকে। রোগীদের মাথায়, হাতে, পায়ে, পিঠে, মুখে ও গলায় গুলি এবং পিলেটবিদ্ধ ছিল। গুলিগুলো ছিল বড় সাইজের। আমাদের হাসপাতালে ৫৭৫ জন গুলি ও পিলেটবিদ্ধ রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদের মধ্যে অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন থাকলেও সিট সংকুলান না হওয়ায় এবং গুরুতর আহত রোগীর চাপ বেশি থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত ১৬৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের বেশিরভাগেরই মাথার খুলি ছিল না। চারজনকে আনা হয় মৃত অবস্থায়। ২৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়।’

১৯ জুলাই ২০২৪ তারিখে যখন রোগী বেড়ে যাচ্ছিল, তখন ডিবির লোকেরা এসে বলেন—আপনি অতি উৎসাহী হবেন না, আপনি বিপদে পড়বেন। তারা আরও বলেন, যাদের ভর্তি করেছেন তাদের রিলিজ করবেন না, এ বিষয়ে ওপরের নির্দেশ আছে’, যোগ করেন নিউরোসায়েন্স হসপিটালের এই চিকিৎসক।

ডা. মো. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘তখন আমরা কৌশলে ভর্তি রেজিস্ট্রারে রোগীদের ধরন পরিবর্তন করে গুলিবিদ্ধের স্থলে রোড এক্সিডেন্ট (সড়ক দুর্ঘটনা) বা অন্যান্য কারণ লিপিবদ্ধ করে ভর্তি করি। আমার রোগীদের বয়স ছিল ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তাদের বেশিরবাগেরই ছিল শিক্ষার্থী। আমি প্রায় ৩৫টি অপারেশন করি এবং অনেক বুলেট আহতদের শরীর থেকে বের করেছি। যেসব রোগীদের মাথার খুলি ছিল না, তাদের কয়েকজন আইসিইউতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। তাদের মধ্যে টিভির একজন সাংবাদিকও ছিল।’

চোখ হারিয়ে চক্ষুবিজ্ঞানে ভর্তি ৫০৪ জন

রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা জবানবন্দিতে বলেন, গত ১৯ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আঘাতপ্রাপ্ত ৪৯৩ জন একচোখ এবং ১১ জন দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছে।  

ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, ‘গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী আসা শুরু হয়। ওই দিন আমরা পিলেটবিদ্ধ পাঁচজন রোগী পেয়েছিলাম। ১৮ জুলাই ছিল একটি রক্তস্নাত দিন। ওই দিন দুপুরের দিকে আমার কাছে খবর আসে, হাসপাতালে অনেক আহত রোগী এসেছে। ওই দিন প্রায় ১০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর বাইরে আনুমানিক আরও ১০০ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আমি জরুরি বিভাগে এসে একটি ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই।’

ডা. জাকিয়া ট্রাইব‍্যুনালে বলেন, ‘যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল তাদের বয়স ১৪-২৫ বছরের মধ্যে। তাদের কেউ কেউ এক হাত দিয়ে এক চোখ, দুই হাত দিয়ে দুই চোখ ধরে ছিল। ওইদিন রাত ৯টায় আমরা ১০টা টেবিলে অপারেশন করতে থাকি। ১৯ জুলাই প্রায় একই চিত্র দেখতে পাই। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত ১০টা টেবিলে অস্ত্রপাচার চলতে থাকে। আমাদের হাসপাতালে যারা চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন, তাদের বেশিরভাগের পিলেট ও বুলেট দ্বারা আহত হয়েছিলেন। বেশিরভাগ রোগীর কর্ণিয়া ছিদ্র হয়ে যায়, তাদের চোখের ভিতরের সাদা অংশ ছিদ্র হয়ে যায়, অনেকের চোখ ফেটে গিয়েছিল। চোখের রেটিনা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ৪, ৫ ও ৬  আগস্ট আমরা অসংখ্য রোগী গ্রহণ করি, যাদের চোখে অপারেশন করা হয়। এ বছরের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত এক হাজার দুজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৮৬৪ জন হাসপাতালটিতে ভর্তি ছিলেন।

গুলির পরও বাট দিয়ে আঘাত করে যন্ত্রণা দেয় পুলিশ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মো. ইদ্রিস তার জবানবন্দিতে ট্রাব্যুনালে বলেন, গুলিতে আহত হওয়ার পর মারুফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুলিশ অ্যাম্বুলেলেন্স আটকে রাখে ২০ মিনিট। এ সময় গুলিবিদ্ধ স্থানে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে আরও কষ্ট দেয় তারা। হাসপাতালে নিতে দেয়নি। একপর্যায়ে মারুফ মারা যায়। তবে তার ময়নাতদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি।

ঘটনার বিভৎসতা তুলে ধরে শহীদ মারুফের হোসেনের বাবা ফুচকা ও চটপটি বিক্রেতা মো. ইদ্রিস বলেন, ‘আমার ছেলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। সময় পেলেই গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে আমাকে সহযোগিতা করত। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় আমার ছেলে মারুফ আন্দোলনের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। সঙ্গে ছিল তার মামা ফয়সাল। জুমার নামাজের পর তারা বাসায় ফিরে এলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করি। পরে সাড়ে ৩টায় আবার বের হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তার (মারুফের) মামা আমাকে ফোন করে জানায়, রামপুরা ব্রিজ থেকে পুলিশ, বিজিবি ও ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করছে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়, মারুফ বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তখন তাকে এ এম জেড হাসপাতালে নেওয়া হয়, কথাগুলো বলেই কেঁদে ফেলেন তিনি। 

মো. ইদ্রিস আরও বলেন, ‘মারুফের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে নিতে বলে সেখানকার ডাক্তাররা। পথে রামপুরা ব্রিজে আওয়ামী লীগ, পুলিশ, বিজিবি মিলে আমার ছেলেকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি আটকায়। তখন মারুফের শরীরে অক্সিজেন লাগানো ছিল, সে বেঁচে ছিল। ১৫-২০ মিনিট আটকে রেখে পুলিশ জানায়—সে মারা গেছে, তাকে হাসপাতালে নেওয়ার দরকার নেই। আমার ছেলের গুলিবিদ্ধ স্থানটি তখন গামছা দিয়ে পেঁচানো ছিল। পুলিশ রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে দেখে। তখন আমার ছেলে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল।’

মো. ইদ্রিস ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘সেখান থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় ছেলেকে। এরপর ৭টা ২০ মিনিটের দিকে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে (মারুফ) মৃত ঘোষণা করেন’, কথাগুলো বলেই কাঁদতে থাকেন ইদ্রিস।    

শহীদ মারুফের বাবা ইদ্রিস আদালতে আরও বলেন, ‘ছেলের মরদেহ নিয়ে যেতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পোস্টমর্টেম ছাড়া দিতে চায়নি। দুই দিন পর ২১ জুলাই পোস্টমর্টেম করে আমার ছেলে মরদেহ হস্তান্তর করে। পুলিশি বাধার কারণে ছেলের মরদেহের পোস্টমের্টম করতে দেরি হয়েছে। পরে পূর্ব বাড্ডা কবরস্থানে ছেলের মরদেহ দাফন করা হয়।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই অভ্যুত্থান শেখ হাসিনা ভিডিও সংবাদ

সংশ্লিষ্ট সংবাদ: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

২ ঘন্টা আগে
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণায় জয়পুরহাটে আনন্দ মিছিল
৩ ঘন্টা আগে
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পর মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ মিছিল 
৩ ঘন্টা আগে
এই রায় অতীতের প্রতিশোধ নয় : চিফ প্রসিকিউটর
  • আরও
সর্বাধিক পঠিত
  1. বৃষ্টি নিয়ে ৫ দিনের পূর্বাভাসে যা জানাল আবহাওয়া অফিস
  2. রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ
  3. সাবেক বিচারপতি মানিকের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
  4. শেখ হাসিনা-কামাল-মামুনের ভাগ্যে কী ঘটছে, জানা যাবে আজ
  5. ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশে আহত শিক্ষিকা না ফেরার দেশে
  6. হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কড়া নিরাপত্তা

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive
  • My Report

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x