ভবদহে জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নদী খনন শুরু
যশোরের ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ছয় নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননকাজ শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে ভবদহ স্লুইস গেটের পাশে নদী খননকাজ উদ্বোধন করা হয়।
খননকাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে ভবদহ এলাকা তথা যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরার পাঁচ উপজেলার ১০ লাখের অধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
নদী খননকাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কলে যুক্ত হন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার ভবদহ অঞ্চলের মানুষের জলাবদ্ধতার দুঃখ দূর করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই সংকটটি অনেক গভীর। তাই কয়েকটি সমন্বিত প্রকল্পের মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নদী খননকাজে যুক্ত হওয়ায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননের মাধ্যমে জলাবদ্ধ এলাকার পানি সরিয়ে ফেলা হবে। এতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের বিষয়টিও সরকারের ভাবনায় রয়েছে। সবাই মিলেই সেই দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জির সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মামুন উর রশিদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক বি এম আব্দুল মোমিন, মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না ও কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসোনা খাতুন বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া নদী খনন শুরু হওয়া প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, জামায়াতনেতা গাজী এনামুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মামুন উর রশিদ বলেন, সবসময় যেকোনো চ্যালেঞ্জিং কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়। ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনও অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। এই অঞ্চলটি তুলনামূলক নিচু এলাকা। এই অঞ্চলের ছয়টি নদী খননের মাধ্যমে পানি অপসারণ করা হবে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের জন্য সমন্বিত প্রকল্পও গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব কিছুর মাধ্যমে এই অঞ্চলের জনগণকে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে মোনাজাত ও ভবদহ স্লুইসগেটের পাশ থেকে মাটি কাটার মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিথিরা।

সাইফুল ইসলাম সজল, যশোর