বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি, ট্রাম্প–শি বৈঠকে চুক্তির ইঙ্গিত
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য আলোচনা নতুন অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে উভয় দেশ জানিয়েছে। এর ফলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের আসন্ন বৈঠকে বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের একটি চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে বলে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টােবর) আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই জানায়, তারা একটি সম্ভাব্য চুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোতে একমত হয়েছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি কাঠামো তৈরি করেছি যা ট্রাম্প ও শি দক্ষিণ কোরিয়ায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন।’
বেসেন্ট পরে এনবিসি নিউজকে জানান, এই চুক্তির আওতায় চীন তার বিরল ধাতুর রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ স্থগিত করতে পারে এবং ট্রাম্প যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, তা এড়ানো সম্ভব হবে। এছাড়া, চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য (বিশেষ করে সয়াবিন) বড় আকারে ক্রয় করতে সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চীনের উপ–প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বাণিজ্য আলোচক হে লিফেং বলেন, ‘উভয় পক্ষ মৌলিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে এবং পরস্পরের উদ্বেগ মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণে একমত হয়েছে।’
হে লিফেং আরও জানান, ‘এখন উভয় দেশই অভ্যন্তরীণ অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে ও বিস্তারিত চূড়ান্ত করবে।’
আরও পড়ুনঃ আসিয়ান সম্মেলনে ট্রাম্প-লুলা বৈঠক, সম্পর্ক উন্নয়নে আশার বার্তা
এই অগ্রগতির খবরে আজ সোমবার (২৭ অক্টােবর) এশিয়ার শেয়ারবাজারে উত্থান দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ও দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচক দুপুরের মধ্যেই যথাক্রমে ২.১ শতাংশ ও ২.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেনগ সূচকও প্রায় ০.৮৫ শতাংশ বেড়েছে।
আসিয়ান সম্মেলন শেষে ট্রাম্প আজ সোমবার জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সঙ্গে বৈঠক করতে টোকিও পৌঁছান। এরপর বুধবার (২৯ অক্টােবর) তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন। সেখানে অনুষ্ঠিতব্য এপেক সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপরই উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে চীনের ক্ষেত্রে তার অবস্থান আরও কঠোর। চীনও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এই মাসের শুরুতে ঘোষণা করেছে যে, ডিসেম্বর থেকে বিরল ধাতু ও কিছু সেমিকন্ডাক্টর পণ্যের রপ্তানির জন্য বিশেষ লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুনঃ থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া ‘ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি’র সাক্ষী ডোনাল্ড ট্রাম্প
এই বিরল ধাতুগুলো (যেমন হোলমিয়াম, সেরিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম) হচ্ছে স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও যুদ্ধবিমান তৈরিতে অপরিহার্য উপাদান।
ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে এই ‘টিট-ফর-ট্যাট’ বাণিজ্য নীতিকে বিশ্লেষকেরা দেখছেন উভয় পক্ষের চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে, যা ট্রাম্প–শি বৈঠকের আগে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার প্রচেষ্টা।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক