শততম টেস্ট খেলছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে এমন মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। সাদা পোশাকে অর্জনের ম্যাচ মুশফিক রাঙিয়েছেন সেঞ্চুরি করে। বাংলাদেশি তারকার শততম ম্যাচের স্মৃতি নিয়ে পোস্ট করেছে আইসিসিও।

ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মুশফিকের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। একটি ছবিতে ক্রীড়া উপদেষ্টা ও বিসিবি সভাপতির হাত থেকে স্মারক গ্রহণ করতে দেখা যায় তাকে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে আইসিসি লিখেছে— ‘মুশফিকুর রহিমের জন্য স্মরণীয় এক শততম টেস্ট ম্যাচ।’

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের নির্ভরতার জায়গা মুশফিকুর রহিম। দেশের ক্রিকেটে ২০ বছর লম্বা ক্যারিয়ার তার। পরিশ্রম ও পেশাদারত্ব তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে বারবার। গতকাল দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে মাঠে নেমেছেন মুশফিক। আজ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়লেন তিনি। শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়ে মুশফিক এখন কিংবদন্তিদের কাতারে।

বিশ্বের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিক। মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ঢাকায় ২১৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেললেন বাংলাদেশের এই ব্যাটার।

মুশফিকের আগে শততম টেস্ট সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব আছে ১০ জনের। প্রথম এই কীর্তি গড়েন ইংলিশ ব্যাটার কলিন কাউড্রে, ১৯৬৮ সালে এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৪ রান করেন।

পাকিস্তানের কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ ১৯৮৯ সালে লাহোরে ভারতের বিপক্ষে শততম টেস্টে ১৪৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। পরের বছর ১৯৯০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ অ্যান্টিগায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৯ রান করে এই তালিকায় নিজের নাম লেখান।

এর ১০ বছর পর ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের অ্যালেক স্টুয়ার্ট শততম টেস্টে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের ইনজামাম–উল–হক বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে ১৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলে এই বিশেষ ক্লাবে যোগ দেন।

এর পরের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং। যিনি আবার এই তালিকায় অন্যদের থেকে আরও এগিয়ে। শততম টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটার তিনি। ২০০৬ সালে সিডনিতে ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ইনিংসে ১২০ ও অপরাজিত ১৪৩ রান করে অনন্য এক রেকর্ড গড়েন।

দক্ষিণ আফ্রিকার দুই তারকা গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলাও এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। শততম টেস্টে স্মিথ ২০১২ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩১ এবং আমলা ২০১৭ সালে জোহানেসবার্গে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৪ রান করেন।

ইংল্যান্ডের জো রুট ও অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের শততম টেস্টটা রাঙিয়েছেন আরো সুন্দরভাবে। কেননা এই দুজনই শুধু শততম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন।

জো রুট ২০২১ সালে চেন্নাই টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ২১৮ রানের ইনিংস খেলেন। আর ওয়ার্নার ২০২২ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০ রান করে নিজের শততম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখেন।

এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকার সর্বশেষ সদস্য হলেন মুশফিকুর রহিম। একমাত্র বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে মাঠে নেমেই কিংবদন্তিদের কাতারে নাম লেখালেন তিনি। বাংলাদেশর টেস্ট ইতিহাসে এই বিশেষ ইনিংসটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।