‘ট্রাম্প শারীরিকভাবে অসুস্থ ও মানসিকভাবে দুর্বল’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি রিপাবলিকান পার্টির ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অস্থির আচরণের পর। এই বিষয়ে বিতর্ক উসকে দিলেন তার জীবনীকার মাইকেল উলফ। তিনি ডেইলি বিস্টের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্পের দুর্বলতা নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন।
উলফ বলেন, ‘এখানে যে দুর্বলতাগুলো আমরা দেখছি তা হলো তার শারীরিক স্বাস্থ্য, তার মানসিক স্বাস্থ্য ও এর সঙ্গে দলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ। তাই আমি বলব— এটি একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের সূচনা।’
৭২ বছর বয়সী উলফের মতে, দুটি মূল লক্ষণ ট্রাম্পের দুর্বল হয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেয়। প্রথমত, ট্রাম্পের ‘রাজনৈতিক পিং-পং’-এর দিকে ইঙ্গিত করে উলফ বলেন, তার মানসিক ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। নভেম্বরে ট্রাম্প যেভাবে দ্রুত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছেন, তা তার মিত্র ও শত্রু উভয়কেই বিভ্রান্ত করেছে।
উলফ আরও বলেন, তিনি মানসিকভাবে যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, আমার মনে হয় আমরা তার কিছু অস্বাভাবিক আচরণ দেখেছি। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ট্রাম্প একদিনের মধ্যেই পুতিনের সমর্থক থেকে জেলেনস্কির সমর্থক হয়ে যেতে পারেন। আবার, তিনি ‘আমরা লোকটিকে দেশ থেকে বের করে দেব’ বলা থেকে দ্রুত ‘আমরা লোকটিকে স্বাগত জানাব’ অবস্থানে চলে যেতে পারেন।
উলফের মতে, তিনি (ট্রাম্প) এই বিপরীতমুখী ধারণাগুলোর মধ্যে এত দ্রুত পরিবর্তন করছেন যে মনে হচ্ছে- তিনি নিজেই জানেন না কী বলছেন, অথবা তিনি আগের কথা ভুলে যাচ্ছেন।
উলফ উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২১ নভেম্বর ট্রাম্প নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে অপ্রত্যাশিতভাবে একটি ভালো বৈঠক করেন। এই মামদানি একজন ডেমোক্র্যাটিক সমাজতন্ত্রী, যাকে রিপাবলিকানরা সব সময় উগ্র বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করতেন।
উলফ আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের এমন অস্থির ও অজনপ্রিয় আচরণের কারণে তার দলের সবচেয়ে অনুগত সদস্যরাও এখন বিরক্ত। তিনি গত সপ্তাহে প্রতিনিধি মার্জোরি টেলর গ্রিনের হঠাৎ পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেন। উলফ বলেন, ‘আপনি (গ্রিন) ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে যে অবিশ্বাস্য ক্লান্তি পেয়েছেন, তা বোঝা যায়। তিনি ট্রাম্পের সবচেয়ে অনুগত ছিলেন, কিন্তু এখন প্রকাশ্য বিদ্রোহে যোগ দিয়েছেন। আমার মনে হয় রিপাবলিকান পার্টিজুড়ে আমরা এটি আরও বেশি দেখতে পাব।’
উলফের মতে, ট্রাম্পের কাছের অন্য লোকেরাও একই রকম ক্লান্তির শিকার। তিনি হাউস স্পিকার মাইক জনসনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে ও তার সঙ্গে বোঝাপড়া করতে গিয়ে জনসনের স্পিকার হিসেবে সময়টা খুব খারাপ কেটেছে।
উলফ বলেন, ‘ট্রাম্প একজন ৭৯ বছর বয়সী মানুষ, যিনি নিজের যত্ন নেন না।’ তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের এই প্রভাব বা আধিপত্য ধরে রাখতে বড় মূল্য দিতে হয়েছে। ‘শারীরিকভাবে তার ওপর এর চাপ পড়েছে, কারণ প্রতিদিন এই সব নাটক সামলানো সহজ নয়। আর মাইক জনসনের মতো তার চারপাশের মানুষেরাও এর জন্য মূল্য দিয়েছেন,’ যোগ করেন উলফ।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস উলফের মন্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে, হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চিউং উলফের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘মাইকেল উলফ একজন মিথ্যাবাদী ও প্রতারক হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজের অসুস্থ ও বিকৃত কল্পনা থেকে নিয়মিত গল্প বানান। কারণ, তিনি এমন এক রোগে ভুগছেন যা তার ছোট মস্তিষ্ককে নষ্ট করে দিয়েছে।’

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক