আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ৬.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, এর আগে গত আগস্টেও মানবিক সংকটের মধ্যে থাকা দেশটিতে মারাত্মক ভূকম্পন আঘাত হেনেছিল। খবর এএফপির।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে উত্তর আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ইউএসজিসের তথ্য অনুসারে, ভূমিকম্পটি আজ ভোরের দিকে ২৮ কিলোমিটার (১৭ মাইল) গভীরে আঘাত হানে এবং এর উপকেন্দ্র ছিল মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছাকাছি। ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো এই পাহাড়ি দেশের দুর্যোগ মোকাবিলাকে এর আগেও বাধাগ্রস্ত করেছে, যার ফলে দুর্গম গ্রামগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে এমনকি কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন পর্যন্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পৌঁছাতে পারেনি।
এএফপি-র একজন সংবাদদাতা জানিয়েছেন, এই ভূকম্পন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম শহর মাজার-ই-শরিফের বাসিন্দাদের ঘর ভেঙে পড়ার ভয়ে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য করেছে। রাজধানী কাবুলে থাকা সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, কম্পনটি প্রায় ৪২০ কিলোমিটার (২৬০ মাইল) দক্ষিণেও অনুভূত হয়েছিল।
এটি তালেবান সরকারের জন্য সর্বশেষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ২০২১ সালে তারা দেশটির ক্ষমতা দখল করার পর থেকে তিনটি বড় মারাত্মক ভূমিকম্পের সম্মুখীন হয়েছে, যদিও দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে থাকা বৈদেশিক সাহায্য নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।
আগস্টে, দেশটির পূর্বাঞবচলে ৬.০ মাত্রার একটি অগভীর ভূমিকম্প পাহাড়ের গ্রামগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এবং এতে ২ হাজার ২০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটায়।
২০২৩ সালে ইরানের সীমান্তের কাছে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে এবং ২০২২ সালে পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে হওয়া বড় ভূকম্পনগুলোতে শত শত লোক নিহত হয়েছিল এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছিল।
জাতিসংঘ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে আফগান জনগণের মধ্যে খাদ্য সংকট বাড়ছে। দেশটি খরা, ব্যাংকিং খাতে অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ এবং প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ আফগান নাগরিককে তাড়িয়ে দেওয়ার কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটে ভুগছে।
আফগানিস্তানে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা, বিশেষ করে হিন্দু কুশ পর্বতমালা বরাবর এলাকায়। এখানে ইউরেশিয়ান এবং ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলি একসঙ্গে মিলিত হয়েছে।
দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধে বিধ্বস্ত ও প্রধানত গ্রামীণ এই দেশটির অনেক ঘরবাড়িই দুর্বলভাবে তৈরি এবং খাড়া রাস্তা ও পথ ধরে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে পৌঁছাতে প্রায়শই কয়েক ঘণ্টা বা এমনকি কয়েক দিনও লেগে যায়। গ্রামগুলো দুর্যোগ বা খারাপ আবহাওয়ার সময় প্রায়শই জরুরি সাহায্য থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক