গাজায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, দাবি ট্রাম্পের
মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গাজায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজার নাজুক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই তিনি আবারও ফিলিস্তিনি সংগঠনটির বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ অক্টােবর) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লেখেন, “মধ্যপ্রাচ্যের আমাদের অনেক মহান মিত্র এবং আশপাশের দেশগুলো উচ্ছ্বাসের সঙ্গে আমাকে জানিয়েছে যে, আমার আহ্বানেই তারা গাজায় প্রবেশ করে হামাসকে ‘শায়েস্তা’ করতে প্রস্তুত, যদি হামাস তাদের চুক্তিভঙ্গ করে।” খবর আল জাজিরার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও মধ্যপ্রাচ্যে সহায়তার জন্য ইন্দোনেশিয়াকে আলাদা করে ধন্যবাদ জানান।
ট্রাম্প বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি ভালোবাসা ও ঐক্যের এমন দৃশ্য হাজার বছরেও দেখা যায়নি। আমি দেশগুলোকে বলেছি—এখনও নয়, আশা আছে যে হামাস সঠিক কাজ করবে। কিন্তু যদি তারা না করে, হামাসের পরিণতি হবে দ্রুত, নির্মম ও ভয়াবহ।”
তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশই সরাসরি হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেয়নি। ইন্দোনেশিয়া ও কিছু দেশ কেবল শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের হত্যা অব্যাহত রেখেছে। অক্টোবর ১০ থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গত দুই বছরে ইসরায়েল হামাসের অধিকাংশ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাকে হত্যা করেছে, একই সঙ্গে ৬৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে মেরে ফেলেছে এবং গাজাকে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে।
যুদ্ধবিরতির নড়বড়ে অবস্থা
ট্রাম্পের প্রশাসন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির একটি ‘ঐতিহাসিক মোড়’ বলে বর্ণনা করেছিল। কিন্তু চুক্তির শুরুর দিক থেকেই ইসরায়েল সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে এবং গাজায় ত্রাণ প্রবেশও বাধাগ্রস্ত করেছে।
গাজা সরকারের তথ্যমতে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় মাত্র ৯৮৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন ৬০০টি ট্রাক প্রবেশের কথা ছিল।
রোববার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ডজনখানেক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর চুক্তি কার্যত ভেঙে পড়ে। হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনার মৃত্যুর পর ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। হামাস এ ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বর্তমানে ইসরায়েলে অবস্থান করছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া ধীরে এগোলেও এটি সঠিক পথে রয়েছে।
জেডি ভ্যান্স জানান, যুক্তরাষ্ট্র ‘সিভিলিয়ান মিলিটারি কো-অপারেশন সেন্টার (সিএমসিসি)’ নামে একটি কেন্দ্র খুলেছে, যা গাজায় পুনর্গঠন ও ত্রাণ সরবরাহের কাজ তদারক করবে।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান ব্র্যাড কুপার জানিয়েছেন, সেখানে প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা কাজ করছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, মার্কিন সেনারা গাজায় সরাসরি প্রবেশ করবে না।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক