ঢাকা টেস্ট
নতুন রেকর্ডে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হলো ৪৭৬ রানে
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তিনি ফিরে গেলে লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে বাংলাদেশ বড় সংগ্রহের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল। এই দুজনের শতরানের জুটি ভাঙার পর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। এতেই প্রথম ইনিংসে ১৪১.১ ওভারে ৪৭৬ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ ।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। এদিন ৬১.১ ওভারে ১৮৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে মুশফিকুর রহিমের ফেরার পর দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত রানের চেষ্টায় ৪৩ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে মুশফিক তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে ব্যাট করতে নেমে শতরানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন মি. ডিপেন্ডবল। বিশ্বের ১১তম ক্রিকটোর হিসেবে শততম টেস্টে শতরানের ইনিংস খেলে তিনি নাম লেখিয়েছেন কিংবদন্তিদের কাতারে।
কিন্তু শতরানের ইনিংস খেলার পর সেটিকে আর বেশিদূর টানতে পারেননি মুশফিক। দ্বিতীয় দিনের নবম ওভারেই হামিফ্রিসের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ফিরেছেন তিনি। ২১৪ বলে ৫ চারে ১০৬ রানে শেষ হয় মুশফিকের শততম টেস্টের প্রথম ইনিংস।
এরপর দ্বিতীয় সেশেনে লিটন-মিরাজের জুটি পার করে ১০০ রান। টেস্টে এই দুজন তৃতীয়বার শতরানের জুটি বাঁধলেন।
দ্বিতীয় সেশনে অভিষিক্ত গ্যাভিন হোয়ের করা ১৩০তম ওভারের চতুর্থ বলে কারমাইকেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মিরাজ। ১০৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রান করেন তিনি। এতেই লিটনের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৩ রানের জুটি ভাঙে মিরাজের।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিটন-মিরাজের শতরানের জুটি এই ইনিংসে বাংলাদেশের তৃতীয় শতরান পার করা জুটি। এতে নতুন এক রেকর্ড হয়েছে।
চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেটে শতরানের জুটি গড়েছে বাংলাদেশ, যা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম। টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে চতুর্থ,পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেটে শতরানের জুটি গড়ার ঘটনা এর আগেও দুবার ঘটেছে, ১৯৭৯ সালে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২০২৩ সালে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে।
এছাড়া, টেস্টে তৃতীয়বার এক ইনিংসে তিনটি শতরানের জুটি গড়ল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই রেকর্ডের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশ।
এরপর দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় পরের ওভারেই ফিরেছেন লিটনও। হামফ্রিসের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে পল স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। ১৯২ বলে ৮ চার ও ৮ ছক্কায় ১২৮ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। এরপর তাইজুল ইসলামও হোয়ের গুগলিতে ১০ বলে ৪ রান করে দ্রতই ফিরেন।
শেষের দিকে ইবাদত হোসেন কিছুটা প্রচেষ্ট চালান। হোয়ের ওভারে এক ছক্কা ও তিন চারে ১৮ রান নেন ইবাদত হোসেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ২৪ বলে ১৮ রান করেই অপরাজিত ছিলেন তিনি।
শেষের দুই উইকেটে ২২ বলে এক চারে মুরাদ করেন ১১ রান আর খালেদ ১২ বলে করেন ৮ রান। বাংলাদেশের শেষ দুটি উইকেট তুলে নিয়েছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে তার শিকার ৬ উইকেটে। টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট তুলে নিলেন আইরিশ এই স্পিনার।
এর আগে গতকাল মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৯২ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় আর সাদমান ইসলাম। ৪৪ বলে ৩৫ রানে সাদমান ফিরলে ভাঙে ৫২ রানের জুটি।
পরে দ্রুতই দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আরেক ওপেনার জয় ফেরেন ৮৬ বলে ৩৪ রান করে। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত উইকেটে থিতুই হতে পারেননি। ১১ বলে ৮ রানে ফেরেন তিনি। এই দুই শিকারও ম্যাকব্রাইনের।
এরপর শততম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম আর অভিজ্ঞ মুমিনুল হকের ব্যাটে চতুর্থ উইকেটে শতক ছাড়ানো জুটি গড়ে বাংলাদেশ। ১২৮ বলে ৬৩ রান করে মুমিনুল ফিরলে ভাঙে ১০৭ রানের জুটি। এরপর বাকিটা সময় লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে নির্বিঘ্নে প্রথম দিন পার করে দেন মুশফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস): ১৪১.১ ওভারে ৪৭৬/১০ (জয় ৩৪, সাদমান ৩৫, মুমিনুল ৬৩, শান্ত ৮, মুশফিক ১০৬, লিটন ১২৮, মিরাজ ৪৭, তাইজুল ৪, মুরাদ ১১, ইবাদত ১৮*, খালেদ ৮; নেইল ১১-১-৪৭-০, ক্যামফার ১০-০-৩২-০, ম্যাকব্রাইন ৩৩.১-৩-১০৯-৬, হামফ্রিস ৫০-৫-১৫১-২, হোয় ৩৪-৩-১১৫-২, টেক্টর ৩-০-১০-০)

স্পোর্টস ডেস্ক