ভুল ইনজেকশনে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভ, তদন্ত কমিটি গঠন
ভুল ইনজেকশন পুশে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে এই ঘটনা ঘটে।
রোগীদের স্বজনের দাবি, নার্সদের অবহেলার কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালকও ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার কটিয়াদি উপজেলার ধুলদিয়া নতুন বাজার এলাকার ফালু মিয়ার ছেলে মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২) হার্নিয়া অপারেশন এবং চারদিন আগে নিকলী উপজেলার দামপাড়া এলাকার আ. কাদিরের ছেলে জহিরুল ইসলাম (২২) এপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ সকালে দুজনেরই অপারেশন হওয়ার কথা ছিল।
মনিরুজ্জামান মল্লিকের চাচাতো ভাই মোজাফফর জানান, রোগীর অপারেশানের আগে প্রস্তুতি হিসেবে আজ সকাল ৮টার দিকে সিনিয়র স্টাফ নার্স নাদিরা ওই দুই রোগীকে ওটিতে না নিয়ে ওয়ার্ডেই চেতনা নাশক অ্যানেসথেশিয়া ইঞ্জেকশন পুশ করেন। এর ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে ওয়ার্ডে জ্ঞান হারিয়ে তাঁরা মারা যান। ‘নর কিউ’ নামক অ্যানেসথেশিয়ার ইনজেকশনটি অপারেশন থিয়েটারে পুশ করার কথা ছিল, সেটি আগেই ভুল করে ওয়ার্ডের সিটেই নার্স পুশ করেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের স্বজনরা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করে স্লোগান দেয়। এ সময় কয়েকজন বিক্ষুব্ধ তরুণ একটি গেট ও কয়েকটি জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার নার্সদের ভুলের কারণে এমনটা হয়েছে স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত নার্সকে এখনই দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে পেলে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের সুপারিশ করা হবে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে অভিযুক্ত নার্সের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলেও জানান ওসি।

মারুফ আহমেদ, কিশোরগঞ্জ