পাবনায় সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস পালিত
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাবনায় পালিত হয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের সপ্তম প্রয়াণ দিবস।
এ উপলক্ষে পাবনা জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আজ শুক্রবার ভোরে সুচিত্রা সেনের পৈতৃত্রিক বসতবাড়িতে নির্মিত সুচিত্রা সেনের ভাস্কর্যের প্রতি ফুলের শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মীরা।
সকাল সাড়ে ৯টায় সুচিত্রার পৈতৃক ভিটা থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা একটি ব্যানার নিয়ে পদযাত্রা বের করে। পদযাত্রাটি শহর ঘুরে সুচিত্রা সেনের কিশোরী জীবনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মহাখালী পাঠশালা) টাউন স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
স্মরণ পদযাত্রা শেষে স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় সুচিত্রা সেন স্মরণে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা। পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহামুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, শিক্ষাবিদ লেখক প্রফেসর মনোয়ার হোসেন জাহেদী, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আবদুল মতীন খান, পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামিম আক্তার মিলি প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠিত হয় সুচিত্রা সেন অভিনীত বিভিন্ন চলচ্চিত্রের গানের অনুষ্ঠান। গান পরিবেশন করেন ক্লোজআপ তারকা বিউটি আক্তার মুক্তা। বিকেলে মহানায়িকার বসতবাড়ি স্মৃতি সংগ্রহশালায় পরিবেশন করা হয় সুচিত্রা সেন অভিনীত বাংলা চলচ্চিত্র।
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহানায়িকা মারা যান।
এ ছাড়া সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ সকালে পাবনা প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এই মহানায়িকার পৈতৃক বাড়িটি পাবনার সংস্কৃতিকর্মীদের আন্দোলন ও প্রশাসনের সহযোগিতায় জামায়াতে ইসলামীর হাত থেকে দখলমুক্ত হয় প্রায় সাত বছর আগে। আইনগতভাবে লড়াই করে ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই জামায়াতের হাত থেকে দখলমুক্ত হয় সুচিত্রাসরে বসতভিটা। আর সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে পাবনা জেলা প্রশাসক ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল জন সাধারণের জন্য অবমুক্ত করেন মহানায়িকার বাড়িটি।
সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনার গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে। ১৯৬০ সালে বসতভিটাটি রেখে সপরিবারে পাড়ি জমান কলকাতায়। ৮২ বছর বয়সে তিনি মারা যান। ১৯৫২ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি করে সাড়া ফেলেন চলচ্চিত্র অঙ্গনে। সুচিত্রা সেন বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি ‘দেবদাস’ (১৯৫৫) ও ১৯৭৮ সালে ‘প্রণয় পাশা’ তা শেষ ছবি।

এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা