ইংরেজি বিষয়ে কঠিন প্রশ্নের অভিযোগ, প্রধান পরীক্ষকের পদত্যাগ
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষায় ইংরেজি প্রশ্নপত্র কঠিন করার অভিযোগ ওঠায় প্রধান পরীক্ষক পদত্যাগ করেছেন। তার নকশা করা এই পরীক্ষায় মাত্র তিন শতাংশের বেশি পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ‘সুনুং’ নামে পরিচালিত এই পরীক্ষাটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। দেশটির শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য এই পরীক্ষা অপরিহার্য। প্রশ্নপত্র নিয়ে সমালোচনা উঠার পর কোরিয়ার ইনস্টিটিউট ফর কারিকুলাম অ্যান্ড ইভালুয়েশনের প্রধান ওহ সেউং-কেওল পদত্যাগের ঘোষণা দেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরীক্ষার ইংরেজি অংশটি ‘অ্যাবসোলিউট ইভালুয়েশন’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় তিনি ‘ভারী দায়িত্ববোধ’ অনুভব করেছেন। তিনি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে উদ্বেগ সৃষ্টি এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা মাত্র ৭০ মিনিটে ৪৫টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। সমালোচিত প্রশ্নগুলোর মধ্যে ছিল দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট ও টমাস হবসের আইনের শাসন নিয়ে মতামত বিশ্লেষণ করা, সময়ের প্রকৃতি ও ঘড়ি নিয়ে আলোচনা করা এবং ভিডিও গেম অবতারের ক্ষেত্রে অস্তিত্বের ধারণা প্রয়োগ করা।
পরীক্ষার এই কঠিন প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দক্ষিণ কোরিয়ায় পরীক্ষাটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, ইংরেজি লিসিনিং টেস্টের সময় কোনো শব্দ যাতে না হয়, সেজন্য সারা দেশে ৩৫ মিনিটের জন্য বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
ইনস্টিটিউটটি স্বীকার করেছে, প্রশ্নপত্রটি উপযুক্ত কঠোরতার মান বজায়ে রাখতে পারেনি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক বোঝা কমানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। পরীক্ষায় ‘কালচারটেইনমেন্ট’ নামে একটি শব্দ ব্যবহার নিয়েও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। এই শব্দটি ইংরেজি ভাষায় সাধারণত ব্যবহার হয় না বলে বিশেষজ্ঞরাও মত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার এই অতি-প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষাব্যবস্থা দেশের কিশোর হতাশা এবং আত্মহত্যার উচ্চ হারের জন্য আংশিকভাবে দায়ী বলে মনে করা হয়।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক