আইইএলটিএসে ৮০ হাজার ফলাফলে ভুল, যুক্তরাজ্যে হাজারো অভিবাসী
বাধ্যতামূলক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পরও হাজারো অভিবাসী যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়েছেন। পরীক্ষার নম্বর মূল্যায়নে বড় ধরনের ত্রুটির কারণে এমনটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত একটি ভাষা পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সর্বোচ্চ ৮০ হাজার পরীক্ষার্থী ভুল ফলাফল পেয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে পরীক্ষায় ফেল করলেও পাস নম্বর পেয়েছেন, যার ফলে তারা বৈধভাবে পড়াশোনা বা কাজের ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন।
এর ফলে দুর্বল ইংরেজি দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, এনএইচএস কর্মীসহ অন্যান্য অভিবাসীরা এমন ভিসা পেয়েছেন, যার জন্য তারা যোগ্য ছিলেন না।
বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, যারা ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও ভিসা পেয়েছেন, তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ আইইএলটিএস পরীক্ষায় অংশ নেন। এই পরীক্ষা যৌথভাবে পরিচালনা করে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইডিপি।
আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিছু পরীক্ষার লিসেনিং ও রিডিং অংশে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ হয়। সংস্থাটির দাবি, মোট পরীক্ষার প্রায় এক শতাংশ এতে প্রভাবিত হয়েছে—সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় ৭৮ হাজার পরীক্ষার্থী।
ত্রুটিটি শনাক্ত হতে সময় লাগায়, ভুলভাবে পাস করা বহু ব্যক্তি ইতোমধ্যে ভিসা পেয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মাসে আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের সঠিক ফল জানিয়ে ক্ষমা চেয়েছে এবং সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের কিছু স্বাধীন সরকারি কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, এনএইচএস ও সামাজিক সেবায় কর্মরত অনেকের ইংরেজি দক্ষতা অপ্রতুল, যা রোগীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ—কিছু ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হয়েছে। এক মামলায় দেখা যায়, এক কেয়ার ওয়ার্কার শ্বাস নেওয়া ও রক্তপাত এবং ‘এলার্ট’ ও ‘এলাইভ’-এর পার্থক্য বুঝতে পারেননি।
শেডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ বলেন, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ইংরেজি ঠিকমতো বলতে পারেন না। এটি একীভূতকরণ সংকটকে আরও তীব্র করেছে। যারা ভুলভাবে ভিসা পেয়েছেন, তাদের সরিয়ে নেওয়া উচিত।
এদিকে ব্রিটিশ কাউন্সিল কোভিড সময়কার সরকারি ঋণ হিসেবে ১৯৭ মিলিয়ন পাউন্ডের দেনায় রয়েছে। ভাষা পরীক্ষার এই ত্রুটিজনিত ক্ষতিপূরণ দাবিতে সংস্থাটির আর্থিক চাপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আইইএলটিএসের এক মুখপাত্র বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমিত সংখ্যক পরীক্ষায় ফলাফলের ত্রুটি হয়েছিল। ৯৯ শতাংশের বেশি পরীক্ষা এতে প্রভাবিত হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঠিক ফল জানিয়েছি এবং ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক