গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিলো হুথি আদালত
ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৭ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত আদালত। স্থানীয় সময় শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী সানায়ার স্পেশালাইজড ক্রিমিনাল কোর্ট এই রায় ঘোষণা করে। খবর আল জাজিরার।
হুথি পরিচালিত গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি ‘গুপ্তচর নেটওয়ার্কে’ কাজ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। আদালত জানায়, দণ্ড কার্যকর করা হবে ‘জনসমক্ষে, যাতে এটি অন্যদের জন্যও সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করে।’
একই মামলায় আরও একজন নারী ও একজন পুরুষকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, আর একজনকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মোট ২০ জন এই মামলায় বিচারাধীন ছিলেন।
হুথি গণমাধ্যম জানায়, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনবিরোধী বিদেশি রাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়, যার মধ্যে যুক্তরাজ্যও ছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ অভিযুক্ত ইয়েমেনিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং তাদের দিয়ে সামরিক, নিরাপত্তা ও বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় ‘বেশ কিছু মানুষ নিহত এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ’ ঘটে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক হামলার পর হুথি যোদ্ধারা লোহিত সাগরের নৌপথে আন্তর্জাতিক জাহাজ ও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনে একাধিক যৌথ বিমান হামলা চালায়। তবে গত মাসের গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর হুথিরা হামলা বন্ধ করেছে।
ইসরায়েলও ইয়েমেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে জ্বালানী ডিপো, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এসব হামলায় রাজনৈতিক নেতাসহ বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গত আগস্টে সানায়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাউই ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন বলে হুথিরা জানায়।
হুথি কর্তৃপক্ষ গত এক বছরে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় ও বিদেশি বহু কর্মীকে আটক করেছে এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা ও কর্মীদের মুক্তির দাবির পরও হুথিরা এসব পদক্ষেপকে ‘ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তি প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক