দিল্লির দূষণ
‘পরিষ্কার বাতাস চাই’ দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মারাত্মক বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন বিক্ষোভকারীরা। শীত মৌসুম ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবারও দূষণের চাদরে ঢেকে গেছে শহরটি। আর এই পরিস্থিতিতে রোববার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া গেট এলাকায় সমবেত হন শতাধিক মানুষ।
প্রতিবাদকারীরা ব্যানার ও পোস্টার হাতে নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। কেউ কেউ সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের বাসে তুলে নিয়ে যায় ও পরে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর আল জাজিরার।
আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালেই দিল্লির বায়ুমান সূচক একিউআই ইনডেক্স ৩৫০ ছাড়িয়ে যায়, যা ভারতের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (সিপিসিবি) মানদণ্ডে ‘খুবই খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে। শহরের কিছু এলাকায় এই সূচক ৪০০-এরও বেশি রেকর্ড করা হয়েছে—যা ‘অতি বিপজ্জনক’ হিসেবে গণ্য।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ভারতের ছয়টি শহর রয়েছে, এর মধ্যে নয়াদিল্লি শীর্ষে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষক সংস্থা আইকিউএয়ার দিল্লিকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবছর শীতের শুরুতে আশপাশের রাজ্যের কৃষকেরা ফসল কাটার পর জমিতে পোড়ানো খড়ের ধোঁয়া শহরে ঢুকে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ধোঁয়াটি আটকে পড়ে যানবাহন ও কারখানার নির্গমনের সঙ্গে মিশে ঘন কুয়াশায় রূপ নেয়। ফলে শ্বাসকষ্টসহ নানা শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ে এবং প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে।
যদিও সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে—যেমন নির্মাণকাজে সীমাবদ্ধতা, ডিজেল জেনারেটর নিষিদ্ধকরণ, গাড়ির প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং ফসল পোড়ানো বন্ধে ভর্তুকি প্রদান—তবে ফল আশানুরূপ নয়। গত মাসে দূষণ কমাতে কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টির চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
বিরোধী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক্সে লিখেছেন, ‘পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নেওয়া প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার।’ তিনি প্রতিবাদকারীদের গ্রেপ্তারকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেন।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের পরিবেশমন্ত্রী মঞ্জিন্দর সিং সিরসা বলেন, ‘দূষণ রোধে সরকার সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’
নয়াদিল্লির আকাশে এখন ধোঁয়া আর ধুলার আস্তরণ—যা শুধু শহর নয়, সমগ্র দেশের স্বাস্থ্য ও নীতিনির্ধারকদের জন্য এক অশনিসংকেত।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক