মালয়েশিয়া উপকূলে অভিবাসী বোঝাই নৌকাডুবি, নিহত ১
থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছে প্রায় ৯০ জনকে বহনকারী একটি অবৈধ অভিবাসী নৌকাডুবির ঘটনায় একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েক ডজন লোক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সময় রোববার (৯ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় রিসোর্ট দ্বীপ লংকাউইয়ের ঠিক উত্তরে তারুতাও দ্বীপের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। খবর আল জাজিরার।
মালয়েশিয়ার সমুদ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জনকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে একই সংখ্যক লোক বহনকারী আরও দুটি নৌকার অবস্থা এখনও অজানা।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান আদজলি আবু শাহ সাংবাদিকদের বলেন, ৯০ জনকে বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিখোঁজদের সন্ধানে বড় আকারের উদ্ধার অভিযান চলছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বার্নামা আদজলি আবু শাহকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, জীবিতদের মধ্যে তিনজন মিয়ানমারের নাগরিক, দুইজন রোহিঙ্গা শরণার্থী ও একজন বাংলাদেশি পুরুষ রয়েছেন। আর মরদেহটি একজন রোহিঙ্গা নারীর।
আল জাজিরার রব ম্যাকব্রাইড কুয়ালালামপুর থেকে জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে অভিবাসীরা প্রায় তিন দিন আগে মিয়ানমারের উপকূল থেকে রওনা হয়েছিল, তারা মূলত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু হতে পারেন।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান জানান, মালয়েশিয়াগামী এই মানুষগুলো প্রথমে একটি বড় জাহাজে উঠেছিল। কিন্তু তারা সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছালে কর্তৃপক্ষের নজর এড়াতে তাদের তিনটি ছোট নৌকায় স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিটি নৌকায় প্রায় ১০০ জন যাত্রী ছিল।
রোহিঙ্গা সংকট ও বিপজ্জনক যাত্রা
মালয়েশিয়া এশিয়া থেকে আসা লাখ লাখ অভিবাসী ও শরণার্থীর আশ্রয়স্থল। প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের সদস্যরা বৌদ্ধ প্রধান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে গেছে, যেখানে তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়েছে ও তারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে শিবিরে বাস করছে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ায় অনেক শরণার্থী মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের সহায়তায় মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো সমৃদ্ধ দেশগুলোতে বিপজ্জনক সমুদ্রপথ অতিক্রম করার চেষ্টা করে। এই যাত্রাগুলো প্রায়শই করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়, যার ফলে ঘন ঘন নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরেও মালয়েশিয়ার উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনায় ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।
ম্যাকব্রাইড বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা ও চলমান গৃহযুদ্ধের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার জন্য মানুষকে আরও বেশি অবৈধ নৌ ভ্রমণ করতে বাধ্য করছে। এই যাত্রাগুলোর কিছু খুব করুণ পরিণতির সঙ্গে শেষ হচ্ছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক