যুক্তরাষ্ট্রে অফিস ‘ফাঁকি’ দিয়ে ডলার আয়, ১৫ বছরের সাজার মুখে ভারতীয়
৩৯ বছর বয়সী মেহুল গোস্বামী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিউইয়র্কের বাসিন্দা। তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অফিস অব ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেসে কর্মরত ছিলেন। একই সময়ে তিনি মাল্টার একটি কোম্পানির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করে এক লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ মার্কিন ডলার উপার্জন করেন। সরকারি একটি দপ্তরের দায়িত্ব পালনকালে এ ধরনের একটি ‘বড় চুরির’ অভিযোগে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর এনডিটিভির।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, নিউইয়র্ক স্টেট ইন্সপেক্টর জেনারেলের অফিস ও সারাটোগা কাউন্টি শেরিফের অফিসের যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেহুল গোস্বামীর এই অসদাচরণ করদাতাদের অর্থের ৫০ হাজার ডলার অপব্যবহারের সমতুল্য।
মেহুল গোস্বামী নিউইয়র্ক স্টেট অফিসে দূর থেকে (রিমোটলি) কাজ করতেন। এটি ছিল তার প্রাথমিক কাজ, কিন্তু একইসঙ্গে তিনি ২০২২ সালের মার্চ থেকে মাল্টার একটি সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি গ্লোবালফাউন্ড্রিজের ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
একটি বেনামি ইমেলের মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার পর মেহুল গোস্বামীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তিনি একজন বেসরকারি নিয়োগকর্তার সঙ্গে একই সময়ে কাজ করেছিলেন, যখন তার একজন রাষ্ট্রীয় কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল।
সিবিএস ৬ নিউজের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ইন্সপেক্টর জেনারেল লুসি ল্যাং বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের সততার সঙ্গে সেবা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেহুল গোস্বামীর এ অসদাচরণ সেই বিশ্বাসের গুরুতর লঙ্ঘন। রাষ্ট্রের জন্য কাজ করার দাবিতে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন চাকরি করা জনসাধারণের সম্পদের অপব্যবহার, যার মধ্যে করদাতাদের অর্থের ব্যাপারও রয়েছে।
গত ১৫ অক্টোবর সারাটোগা কাউন্টি শেরিফের অফিস মেহুল গোস্বামীকে ‘দ্বিতীয় ডিগ্রির বড় চুরির’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করে, যা নিউইয়র্কে গুরুতর ‘ক্লাস সি’ ক্যাটাগরির অপরাধ এবং এতে সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষের দিকে মেহুল গোস্বামী মাল্টা টাউন কোর্টের বিচারক জেমস এ ফাউচির সামনে হাজির হন এবং মামলা চলমান থাকায় তিনি জামিন ছাড়াই মুক্তি পান। তবে নিউইয়র্কের আইন অনুসারে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
পুলিশ কর্মকর্তা লুসি ল্যাং বলেন, নিউইয়র্কে জনসেবার দায়িত্বে অসততার জন্য যে কাউকে জবাবদিহির আওতায় আনতে আমরা আইন প্রয়োগকারী অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব।
সংবাদমাধ্যম টাইমস ইউনিয়নের এক প্রতিবেদন অনুসারে, মেহুল গোস্বামী ইউইয়র্কে একজন প্রকল্প সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছিলেন। ২০২৪ সালে তিনি মাল্টার ওই কোম্পানির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করে এক লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ মার্কিন ডলার আয় করেছিলেন, যা তাকে এবার বিচারের মুখোমুখি করতে যাচ্ছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক