সূচকসহ লেনদেন মন্দা, কমেছে ৭১ শতাংশ কোম্পানির দর
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমে আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) ৩৫৬ কোটি টাকার চলে এসেছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ডিএসইর সব ধরনের সূচকের পতন হয়েছে এদিন। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। আগের কর্মদিবস রোববারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধনের পরিমাণ কমেছে এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের (এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক) শেয়ার গত বৃহস্পতিবার লেনদেন স্থগিত করেছে ডিএসই। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরামর্শে ডিএসই এই লেনদেন স্থগিত করেছিল। অবশ্য এর আগের দিন বুধবার নানা অনিয়মে বিপর্যস্ত শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত করতে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ওইদিন তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ বিষয় জানিয়ে পাঁচ ব্যাংকের সচিবদের পৃথক পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে।
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটি এখন নেগেটিভ। তাই শেয়ার দর জিরো বিবেচনা করা হবে। এজন্য কাউকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পরে পুঁজিবাজারের সিকিউরিটিজগুলোতে। এতে গত বৃহস্পতিবারের মতো রোববারও পতনে ঢেকে যায় ডিএসই। সেই পতন আজও চলমান।
অবশ্য লেনদেন শুরুতে আজ শেয়ার কেনার চাপে সূচক উত্থান হয়েছিল। লেনদেন শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ পয়েন্ট উত্থান হয়। বেলা বাড়ার পর শেয়ার কেনা কমে বেচার চাপ বাড়ে। পরে সূচকটি পতনে ফিরে আসে। লেনদেন শুরুর ৪৪ মিনিটে সূচক ডিএসইএক্স ৩৪ পয়েন্ট পতন হয়। পরে সেই পতন আরও বাড়ে। লেনদেন শেষে সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয় ৩৯ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিনশেষে দাঁড়ায় চার হাজার ৮৬০ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে। আগেরদিন গতকাল রোববার ডিএসইএক্সের পতন হয়েছিল ৬৮ দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিনশেষে দাঁড়িয়েছিল চার হাজার ৮৯৯ দশমিক ৯২ পয়েন্টে। এর আগের কর্মদিবস গত বৃহস্পতিবার ডিএসইএক্সের পতন হয়েছিল ১৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিন শেষে দাঁড়ায় চার হাজার ৯৬৭ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে।
আজ লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস রোববার লেনদেন হয়েছিল ৪০২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৪১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। আজ ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ৭৩১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। গত রোববার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৮৫ হাজার ৫১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আজ লেনদেন হওয়া ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ২৭৫টির বা ৭১ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির। গত রোববার লেনদেন হওয়া ৩৯০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছিল ৩৪টির, কমেচিল ৩২৯টির বা ৮৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা, ডমিনেজ স্টিলের ১২ কোটি ৮২ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং মনোস্পুল বাংলাদেশের আট কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির দর কমেছে ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ। অন্যদিক দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক