স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা চোরাকারবারি না : বাজুস সভাপতি
ব্যবসায়ীরা চোরাকারবারি নন, যারা ব্যবসা করে তারা কোনোদিন চোরাকারবারিতে জড়াবে না। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নিউ ইস্কাটনে বাজুস অফিসের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নবনির্বাচিত নতুন সভাপতি ও ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভোর্সের মালিক এনামুল হক খান দোলন এ কথা বলেছেন।
এনামুল হক খান দোলন বলেন, মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারি না। যারা চোরাকারবারি করে তারা কোনোদিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনোদিন চোরাকারবারিতে জড়াবে না।
এনামুল হক খান দোলন আরও বলেন, তিনি (সায়েম সোবহান আনভীর) বাজুসের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার চেষ্টায় বাজুস আজ প্রায় ৪০ হাজার সদস্যের পরিবার। বাজুস সায়েম সোবহান আনভীরের উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাব।
বাজুসের নতুন সভাপতি বলেন, দেশে সোনা আমদানির ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠিন। এই প্রক্রিয়ায় সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। তাই সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। যতদিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, ততদিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসতো, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য সায়েম সোবহান আনভীর ব্যবসায়ীদের জুয়েলারি ফ্যাক্টরি করার কথা বলে আসছেন। এই ধারাবাহিকায় বাংলাদেশে এখন অনেক জুয়েলারি ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে বাজুস সুসংগঠিত ও সর্ববৃহৎ সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে।
বাজুসের নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আমাদের ঐতিহ্যের অংশ এবং আজ এটি দেশের অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত হয়েছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান এবং ১০ থেকে ১২ লাখ কারিগর এই শিল্পে কাজ করছেন। আমাদের দেশে সোনার বার্ষিক চাহিদা সরকারি হিসাবে ৩০ থেকে ৪০ টন, আর বেসরকারি হিসাবে ৭০ থেকে ৯০ টন। এ চাহিদার বড় অংশই আসে পুনর্ব্যবহৃত সোনা থেকে। আমাদের দেশে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকার সোনার বাজার ও ৩০ হাজার কোটি টাকার হীরার বাজার রয়েছে। এতো বড় বাজার থাকা সত্ত্বেও উচ্চ কর-শুল্ক, জটিল আমদানি প্রক্রিয়া এবং আধুনিক উৎপাদন অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় এখনো প্রত্যাশিত নয়। প্রাথমিক কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানিতে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে আধুনিক ফ্যাক্টরি স্থাপনও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
সবার সহযোগিতায় আমরা ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি জানিয়ে নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, নবনির্বাচিত কমিটি দেশের জুয়েলারি শিল্পে যেসব সমস্যা আছে তা সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস যারা জুয়েলারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের এ কমিটি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে পরিচিতি এবং বাংলাদেশের পণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে।
এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫–২০২৭ মেয়াদের নতুন পরিচালনা পর্ষদের নাম ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল। এতে সভাপতির পাশাপাশি একজন সিনিয়র সহ-সহভাপতি, তিনজন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষসহ ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এখন থেকে আর কেউ থাকবেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদক