গ্রেপ্তার আসামির বক্তব্য প্রচারের ব্যাখ্যা দিলেন আরএমপি কমিশনার
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার ঘটনার বিষয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু সুফিয়ান।
আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি অফিসিয়াল প্রটোকল ছাড়াই একটি প্রাইভেট কারে চড়ে সাদা পোশাকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (রাজপাড়া) উপস্থিত হন এবং বিচারক আশিকুর রহমানের আদালতে বিষয়টির ব্যখ্যা দেন।
এর আগে রাজশাহীতে বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৮) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামি লিমন মিয়ার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের ঘটনা ঘটে।
আদালতে আরএমপি কমিশনার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের বিবিধ মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে আগামী ১ ডিসেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
আরএমপি কমিশনারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জমশেদ আলী জানান, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় একজন সাংবাদিক অভিযুক্ত লিমন মিয়ার বক্তব্য ক্যামেরায় ধারণ করে তা প্রচার করেন। এটি করা যায় না। তাই আদালত বিষয়টি জানতে আরএমপি কমিশনারকে তলব করেছিলেন। পুলিশ কমিশনার আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে লিখিত জবাব দিয়েছেন। জবাবে তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই তিনি অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ মাসুম জানান, পুলিশ কমিশনারের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন যে—এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। আদালতে চলমান বিবিধ মামলা থেকে পুলিশ কমিশনারকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছেন। মেট্রোপলিটন আদালত-৫ এর বিচারক আশিকুর রহমান শুনানি শেষে আগামী ১ ডিসেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
গত ১৩ নভেম্বর রাজশাহী নগরীর ডাবতলা এলাকায় বিচারকের ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ সময় তার স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকেও হত্যার উদ্দেশে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে পুলিশ আটক করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযুক্ত লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করে, যা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ঘটনায় গত ১৫ নভেম্বর আরএমপি কমিশনারকে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আবু সাঈদ রনি, রাজশাহী (সদর-গোদাগাড়ী-পবা)