সংসদে নারীদের আসন বাড়ানো নিয়ে যা আছে জুলাই সনদে

গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা।
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক জমকালো আয়োজনে এই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই সনদে জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির বিষয়ে বেশ কিছু যুগান্তকারী ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নারীর আসন সংখ্যা ও পদ্ধতিগত সংস্কার
সনদের ২১ নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে সনদটির ২২ নম্বর ধারায় পদ্ধতিগত সংস্কারের বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। প্রথমত, বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫(৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। একইসঙ্গে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল বিদ্যমান ৩০০ (তিনশ) সংসদীয় আসনের জন্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। এর পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে এই হার ন্যূনতম ১০ শতাংশে উন্নীত হবে।
সনদে বলা হয়েছে, সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থিতার লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনে ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ বর্ধিত হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন অব্যাহত রাখবে।
সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ
সংবিধানে বর্ণিত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, সংবিধানের সপ্তদশ (১৭তম) সংশোধনী (যা ৮ জুলাই ২০১৮ সালে সংসদে পাস হয়)-এর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়, সেই হিসাবে তা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে—যদি সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থিতার লক্ষ্য ২০৪৩ সালের আগেই অর্জিত হয়ে যায়, তাহলে সংবিধানের সপ্তদশ (১৭তম) সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবর্তিত এই বিধান নির্ধারিত সময়ের আগেই বাতিল হয়ে যাবে।