ভয়াবহ বিপর্যয়, পাঁচ ঘণ্টা অচল থাকার কারণ জানাল ক্লাউডফ্লেয়ার
মারাত্মক সিস্টেম ব্যর্থতায় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ক্লাউডফ্লেয়ার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অচল হয়ে পড়ে। এর ফলে এক্স (টুইটার), চ্যাটজিপিটি, ক্যানভাসহ বিশ্বজুড়ে অসংখ্য বড় বড় ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যায়। ব্যবহারকারীরা শুধু এইচটিটিপি ৫০০ ‘ইন্টারনাল সার্ভার এরর’ বার্তা পাচ্ছিলেন।
ঘটনার পর ক্লাউডফ্লেয়ারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ম্যাথিউ প্রিন্স পুরো ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
কেন ঘটল এই ভয়াবহ বিপর্যয়?
প্রিন্স একে ‘২০১৯ সালের পর ক্লাউডফ্লেয়ারের সবচেয়ে বড় আউটেজ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি কোনো সাইবার আক্রমণ নয়; বরং কোম্পানির ভেতরের একটি ত্রুটি থেকেই বিপর্যয় ছড়িয়েছে।
মূল সমস্যা তৈরি হয় তাদের ডেটাবেস সিস্টেমে করা একটি পারমিশন পরিবর্তন থেকে। এই পরিবর্তনের পর বট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যে ‘ফিচার ফাইল’ তৈরি করত, তার আকার স্বাভাবিক সীমার দ্বিগুণ হয়ে যায়। বড়সড় এই ত্রুটিপূর্ণ ফাইল নেটওয়ার্কজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রক্সি সফটওয়্যারগুলো একে পড়তে গিয়ে ব্যর্থ হতে থাকে।
ত্রুটিটি শুরু হয়েছিল ক্লিকহাউস ডাটাবেস ক্লাস্টারের এক কুয়েরি থেকে। প্রতি পাঁচ মিনিটে এই ফাইল পুনরায় তৈরি হচ্ছিল। ক্লাস্টারের কিছু নোড আপডেটেড থাকলেও কিছু ছিল না, ফলে ভালো ও খারাপ ফাইলের মিশ্রণ নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ছিল—যা কখনো আংশিক পুনরুদ্ধার, কখনো আবার সম্পূর্ণ ব্যর্থতা সৃষ্টি করছিল। এতে সমস্যা শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রথমে মনে হয়েছিল ডিডিওএস আক্রমণ
প্রাথমিকভাবে টিম ধারণা করেছিল বড় আকারের ডিডিওএস হামলা হয়েছে। কিন্তু পরে কনফিগারেশন-ফাইল ত্রুটি শনাক্ত হলে, ত্রুটিপূর্ণ ফাইলের বিতরণ বন্ধ করা হয় এবং পুরোনো ‘ভালো’ সংস্করণে ফিরে যাওয়া হয়। এরপর মূল প্রক্সি সার্ভিসগুলো রিস্টার্ট করার পর বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে ট্রাফিক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। রাত ১১টা ৬ মিনিটে পুরো পুনরুদ্ধার সম্পন্ন হয়।
কোন কোন সেবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল?
* মূল সিডিএন ও সিকিউরিটি সেবায় বিপুল এইচটিটিপি ৫এক্সএক্স এরর।
* টার্নস্টাইল বট-চ্যালেঞ্জ সেবা একদম লোড হয়নি।
* ওয়ার্কার্স কেভি স্টোর উচ্চমাত্রার ত্রুটি দেখিয়েছে।
* ড্যাশবোর্ড আংশিক সচল থাকলেও অনেকেই লগ ইন করতে পারেননি।
* ইমেইল নিরাপত্তা সেবায় স্প্যাম শনাক্তকরণ দুর্বল হয়ে পড়ে।
ম্যাথিউ প্রিন্স বলেন, আজকের মতো আউটেজ অগ্রহণযোগ্য। আমরা সবসময় আমাদের সিস্টেমকে এমনভাবে তৈরি করেছি যেন ট্রাফিক কখনো থেমে না যায়। অতীতের প্রতিটি আউটেজই আমাদের নতুন, আরও স্থিতিশীল সিস্টেম গড়তে সাহায্য করেছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক