উত্তর কোরিয়ার সাবেক শীর্ষ নেতা কিম ইয়ং আর নেই
উত্তর কোরিয়ার সাবেক আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান এবং শাসক কিম পরিবারের আজীবন অনুগত প্রবীণ নেতা কিম ইয়ং নাম ৯৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) ক্যানসারজনিত কারণে একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে কিম ইয়ং নাম মারা যান।
কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরোনো প্রজন্মের বিপ্লবী কমরেড কিম ইয়ং নাম দেশের উন্নয়ন ইতিহাসে অসাধারণ কৃতিত্ব রেখে গেছেন। ৯৭ বছর বয়সে তিনি তার মহৎ জীবন শেষ করেছেন। খবর আল জাজিরার।
কেসিএনএ আরও জানায়, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন মঙ্গলবার সকালে কিম ইয়ং নামের কফিনে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তার প্রয়াণে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। কিম ইয়ং নামের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আগামী বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কিম ইয়ং নাম দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে উত্তর কোরিয়ার নিয়মতান্ত্রিক পার্লামেন্ট সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলির (এসপিএ) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যদিও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা সর্বদা কিম পরিবারের হাতেই ছিল, তিনি ছিলেন উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের অভ্যর্থনা জানানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় তাকে প্রায়ই কিম জং উন এবং প্রয়াত নেতা কিম জং ইলের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যেত। রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে তার গম্ভীর কণ্ঠস্বরের ভাষণ প্রায়ই প্রচারিত হতো।
কিম ইয়ং ছিলেন উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর সময়কার বিপ্লবী প্রজন্মের অন্যতম প্রবীণ নেতা। ১৯৪৮ সালে উত্তর কোরিয়া প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি শাসক পরিবারের প্রতি তার অবিচল আনুগত্য প্রদর্শন করে গেছেন। ১৯৯৪ সালে কিম ইল সুং মারা গেলে কিম ইয়ং তার শোকগাথা পাঠ করেছিলেন এবং তিন বছরের শোকাবধি শেষে কিম জং ইলকে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাশনাল ডিফেন্স কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিল।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি কিম জং উনের প্রভাবশালী বোন কিম ইয়ো জং-কে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত পিয়ংচ্যাং শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এটি ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায় উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর।
উল্লেখ্য, কিম ইয়ং নামের সঙ্গে বর্তমান নেতা কিম জং উনের কোনো পারিবারিক আত্মীয়তা নেই, যদিও তাদের নামের অংশ বিশেষে মিল রয়েছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক