সব জীবিত জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, আশা ইসরায়েলের
গাজা থেকে বাকি জীবিত সকল জিম্মিকে সোমবার (১৩ অক্টােবর) সকালে ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এটি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
রোববার (১২ অক্টােবর) সরকারি মুখপাত্র শোশ বেদরোসিয়ান বলেন, “আমরা আশা করছি সোমবার সকালে ২০ জন জীবিত জিম্মি একসঙ্গে ফিরবে।” খবর আল জাজিরার।
পূর্ববর্তী বন্দি বিনিময়ের মতোই, তাদের প্রথমে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হবে, এরপর গাজায় অবস্থিত ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। তারপর তারা পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য ইসরায়েলে যাবে।
হামাসের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, বন্দিদের গাজার তিনটি স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রেড ক্রসের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তরের আগে।
ইসরায়েল নিশ্চিত হওয়ার পর যে সব জিম্মি তাদের ভূখণ্ডে ফিরে এসেছে, তখন তারা প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের অনেকেই অভিযোগ ছাড়াই আটক ছিলেন। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৫০ জন আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি। তবে ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারঘুতি এই তালিকায় নেই বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
এছাড়া, ইসরায়েল ২৮ জন মৃত জিম্মির মরদেহও গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আগামীকাল আমাদের সন্তানরা ফিরে আসবে—এটি আমাদের জন্য এক আবেগপূর্ণ মুহূর্ত।”
এই বন্দি বিনিময় এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল সফর শেষে সোমবার মিশরের শার্ম এল-শেখে অনুষ্ঠিত গাজা সম্মেলনে যোগ দেবেন।
ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সভাপতিত্ব করবেন তিনি। এতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানসহ ২০টিরও বেশি দেশের নেতা অংশ নেবেন।
মিশর জানিয়েছে, সম্মেলনে “গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের অবসান এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে” একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হবে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় মানবিক সংকট রয়ে গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের জন্য হাহাকার করছে। অনেকের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে, ব্যাংকিং সেবাও নেই—সবাই এখন পুরোপুরি মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া হবে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলে পাঠানো ২০০ মার্কিন সেনা কেবল যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে থাকবে, কোনো যুদ্ধে অংশ নেবে না।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক