ভারতকে যুদ্ধ বন্ধ না করার অনুরোধ নিহত নৌ কর্মকর্তার স্ত্রীর
‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত নৌ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী নারওয়াল। একই সঙ্গে সরকারকে এই অভিযান বন্ধ না করে ‘সন্ত্রাসবাদের শেষ’ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার (৭ মে) পাকিস্তানে হামলা চালানোর পর গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় হিমাংশী নারওয়াল এ আহ্বান জানান। খবর এনডিটিভির।
হিমাংশী নারওয়াল বলেন, ‘আমার স্বামী প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ছিলেন। তিনি শান্তিরক্ষা ও নিরীহ জীবন রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। এই দেশে কোনো ঘৃণা ও সন্ত্রাস না থাকে তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, তবে আমি তাদের কাছে অনুরোধ করছি যেন তারা এখানেই এটি (সামরিক অভিযান) শেষ না করেন। আমি চাই তারা (সরকার) নিশ্চিত করুক যে এটি আমাদের দেশে সন্ত্রাসবাদের শেষের (নির্মূলের) শুরু।’
হামলার কয়েক দিন আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এই দম্পতি তাদের মধুচন্দ্রিমার জন্য কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তবে গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় যখন ২৬ বছর বয়সী নৌ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল নিহত হন। ওই সময় তার স্বামীর দেহের পাশে বিয়ের চুড়ি পরা অবস্থায় বসে থাকার হৃদয়বিদারক দৃশ্য পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছিল। ওই হামলার ঘটনায় আরও ২৫ পর্যটক নিহত হন।
এর কয়েক দিন পর মিসেস নারওয়াল মুসলিম বা কাশ্মীরিদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার শিকার হন।
সন্ত্রাসী হামলার পর তার প্রথম মন্তব্যে হিমাংশী নারওয়াল বলেছিলেন, ‘আমি পুরো দেশকে তার (বিনয়) জন্য প্রার্থনা করার অনুরোধ করছি। যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি যেন শান্তি খুঁজে পান। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। আমার আরও কিছু বলার আছে। আমি ঘৃণা বাড়তে দেখছি, যা মুসলিম ও কাশ্মীরিদের দিকে নির্দেশ করছে। আমরা এটা চাই না। আমরা শুধু শান্তি চাই - আর কিছুই না।’
অনেকে মিসেস নারওয়ালের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন, আবার কেউ কেউ তার বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন। দেশটির জাতীয় নারী কমিশন (এনসিডব্লিউ) এই ট্রোলিংকে ‘নিন্দনীয়’ এবং ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেছে।
লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের বাবা রাজেশ নারওয়ালও পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা চালানোর আগে ‘১০০ বার’ ভাববে।
রাজেশ নারওয়াল আরও বলেন, ‘যখন এই (পেহেলগাম) ঘটনা ঘটেছিল, তখনও মিডিয়া আমার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসা করেছিল, আমি সরকারের কাছে কী আশা করি। আমার উত্তর ছিল, আমার সরকারের উপর আস্থা আছে। সরকার সেই আস্থার ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে। আমি বলেছিলাম যে এমন কিছু (প্রতিশোধমূলক হামলা) করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাপুরুষোচিত কাজ করার সাহস না করে।’

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক