টানা ১৪ বার কুমিল্লা বোর্ডে সেরা সোনার বাংলা কলেজ
কুমিল্লার গোমতী নদীর উত্তরে নিভৃত পল্লীতে অবস্থিত সোনার বাংলা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতি বছরই চমকপ্রদ ফলাফল করে আসছে। রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কুমিল্লা বোর্ডে সার্বিক ফলাফলের গড় নিম্নমুখী হলেও, সোনার বাংলা কলেজ তাদের সফলতার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামসুল ইসলাম। ফলাফল ঘোষণার সময় তিনি ফলাফলের দিক থেকে বোর্ডের সেরা পাঁচটি কলেজের মধ্যে সোনার বাংলা কলেজকে অন্যতম হিসেবে উল্লেখ করেন।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার টানা ১৪ বারের মতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে শতভাগ সাফল্য অর্জন করে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছে কলেজটি। এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সোনার বাংলা কলেজ থেকে মোট ৩৭১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং তারা সকলেই পাস করেছে। এর মধ্যে ১৪৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করেছে।
বিভাগভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়- বিজ্ঞান বিভাগে ১৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১২ জন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মানবিক বিভাগে ১২৭ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে এবং ২৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১১১ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে এবং ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ভরাসার বাজারসংলগ্ন গোবিন্দপুরে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনার বাংলা কলেজ শুরু থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে আসছে। ২০১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টানা ১৪ বার এই কলেজের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে।
পড়ালেখার পাশাপাশি এই কলেজের শিক্ষার্থীরা জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় এবং বিভিন্ন অলিম্পিয়াডেও ধারাবাহিকভাবে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ সাফল্যের বিষয়ে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য আবু ছালেক মো. সেলিম রেজা সৌরভ বলেন, শৃঙ্খলা বিধির যথাযথ অনুশীলন, ক্লাস কার্যক্রমে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ, ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং গাইড ও মোটিভেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নিবিড় সংযোগ ঘটিয়ে তারা সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টায় আত্মনিবেদিত। তিনি এই গৌরবজনক ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য সুযোগ্য গভর্নিং বডির সঠিক দিকনির্দেশনা এবং একদল মেধাবী, পরিশ্রমী শিক্ষকের নিরলস পরিশ্রমকে কৃতিত্ব দেন। তিনি ভালো ছাত্রের পাশাপাশি ভালো মানুষ গড়ার সুমহান লক্ষ্যে তাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা