ফুলকপির কেজি ২ টাকা!
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ শাক-সবজির পাইকারি বাজার ফুলবাড়ি শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। পুরো হাট প্রাঙ্গণ সবুজ শাক সবজিতে ঠাসা। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা ভালো দামের আশায় তাদের উৎপাদিত সবজি বিভিন্ন যানবাহনে করে এই হাটে আনেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ও থাকে অনেক বেশি।
পুরো উপজেলার প্রায় সব সবজি বিক্রেতা এই হাট থেকে পাইকারি দামে সবজি কিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু, হাটে কাঙ্ক্ষিত দাম না থাকায় শীতকালীন সবজি ফুলকপির দামে কৃষকরা লোকসান গুনছেন। চাহিদার তুলনায় প্রচুর আমদানি, ক্রেতা সংকট ও মজুদের সুবিধা না থাকায় বাধ্য হয়ে টাটকা শাকসবজি কম দামে বিক্রি করছেন তারা। এতে উৎপাদন খরচ না ওঠায় কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাড়িদহ, খামারকান্দি, মির্জাপুর, খানপুর ইউনিয়নে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির পাশাপাশি ফুলকপি চাষ করা হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ফুলবাড়ি পাইকারি সবজি বাজারে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ফুলকপি বেচাকেনা হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি থেকে পাইকারি পর্যায়ে এক কেজি ফুলকপি দুই টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। অথচ একটি ফুলকপি চাষ করতে তাদের কেজিপ্রতি খরচ হয়েছে অন্তত পাঁচ টাকা থেকে সাত টাকা। চড়া দামে সার, বীজ, কীটনাশক কিনে তারা সবজি চাষ করেছেন। অথচ দুই সপ্তাহ ধরে শীতকালীন সব সবজির দামে ধস নেমেছে। এতে কম দামে সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচই উঠছে না চাষিদের। এর ফলে পুঁজি হারিয়ে তারা দিশেহারা।
বাজার আসা কৃষক রফিকুল জানান, গত এক মাস আগে ফুলকপির দাম ছিল দুই হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা প্রতি মণ। ১৫ দিন আগে ছিল এক হাজার টাকা থেকে ১২০০ টাকা প্রতি মণ। গত এক সপ্তাহ আগে ফুলকপির বাজার দর ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি মণ। তবে গত তিন দিন ধরে ফুলকপি বেচা কেনা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা মণ দরে।
হঠাৎ করে বাজার দর কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ, মজুরি খরচ ও বাজারে আনতে পরিবহন খরচও তোলা যাচ্ছে না। কৃষক ফুলকপি বিক্রি করে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

জাহিদ হাসান বগুড়া (শেরপুর-নন্দিগ্রাম)