বিদেশে শ্রমিকরা প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার অভাবে কম বেতন পায় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা ভাষার অজ্ঞতা, সঠিক প্রশিক্ষণ ও যথাযথ শিক্ষার অভাবে তুলনামূলক কম বেতনে চাকরি করে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৌহিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বেশি টাকা দিয়ে বিদেশে গিয়ে কমমূল্যে এসব শ্রমিকরা তাদের শ্রম দিয়ে থাকে।
প্রবাসীদের অবস্থান তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি দেখেছি কাতারে একটা এয়ারপোর্টে দুজন ব্যক্তি কাজ করছেন— একজন বাংলাদেশি, আরেকজন ভারতীয়। তারা উভয়ে একই কাজ করলেও বাংলাদেশের মানুষটির বেতন ভারতীয় ব্যক্তির বেতনের তুলনায় কম। অন্যান্য দেশের কর্মীদের বেতন বাংলাদেশিদের তুলনায় তিনগুণ। কারণ, তারা সরাসরি ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পেয়েছে।’
প্রবাসীদের দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, নেপাল থেকে মালেশিয়াতে একজন কর্মী যায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায়; আমাদের এখান থেকে যায় তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকায়। একই কাজের জন্য একই বেতনে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি— এসব কারণে প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ শুধু বেইস লেভেলের কাজে থেকে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত থাকে। দেশে আমাদের যে ম্যানপাওয়ার এজেন্ট আছে, তাদের প্রতারণার শিকার হয় এসব মেহনতি মানুষ। এই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা আমরা নিতে পারিনি।
এ সময় উপদেষ্টা তার স্মৃতি বিজড়িত বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সুধীজনদের সঙ্গে সভায় নানা ধরনের স্মৃতিচারণ করেন।
মাদকের প্রতি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবককে সজাগ থাকার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা জানান, মাদক একটি ওয়ানওয়ে জার্নি। এটি দিয়ে ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। এ পথে ঢুকলে ফেরার কোনো রাস্তা নেই। কাজেই আগেই সাবধান হতে হবে। অভিভাবকদের অনুরোধ করব— আপনাদের সন্তানদের সময় দিন। পরিবারে সময় না দিলে সন্তানদের বিপথে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুুদ্দুস সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা জামান তন্বী, মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)