বাড়ছে শীতের অনুভূতি, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে
হেমন্তের শেষ দিকে দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বাড়তে শুরু করেছে শীতের অনুভূতি। আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহ জুড়ে জেলার তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি নিয়ে ৫ দিনের পূর্বাভাসে যা জানাল আবহাওয়া অফিস
স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডার আমেজ বেশি থাকলেও রোদ উঠলেই চারপাশ ধীরে ধীরে উষ্ণ হয়। আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে আগেভাগে নামছে শীত। দিনে রোদে গরম লাগে, রাতে আবার প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। সকালে কুয়াশা পড়ে। তাই রাতে গরম কাপড় পরে নিতে হয়। এবার শীতের দাপট কয়েকগুণ বেশি হবে বলছেন স্থানীয়রা।
সকালে বাইরে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও, সূর্যের দেখা পাওয়ায় বেলা বাড়ার পর বাজারগুলোতে উপস্থিতি বাড়ছে। ভ্যানচালক সুজন আলী বলেন, ভোরে বের হলে হাত জমে আসে, ঠান্ডা খুব বেশি লাগে। আবার বেলা বাড়লে গরমে ঘামতে হয়। দোকান কর্মচারী রাব্বি জানান, রাতে দুই–তিনটা সোয়েটার পরেও ঠান্ডা লাগে, আর দুপুরে সেই কাপড় পরে থাকা যায় না।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, দূষণের শীর্ষে দিল্লি
এদিকে আবহাওয়ার এ বিরূপ প্রভাব জনস্বাস্থ্যে ফেলছে ব্যাপক প্রভাব। জেলার আশপাশের এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী, এতে শিশু, বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এ বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরুরও সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার আকাশ থাকতে পারে মেঘলা, তাপমাত্রা যেমন থাকবে
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইমুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেই টাকা প্রত্যেক উপজেলায় সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শীতবস্ত্র দিতে শুরু করেছে। শীতার্তদের পাশে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত।

ফাহিম হাসান, পঞ্চগড় (সদর-আটোয়ারী-বোদা)