আরপিওর অগণতান্ত্রিক সংশোধনী বাতিলের দাবি বাম জোটের
বাম গণতান্ত্রিক জোট গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচনি আচরণবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনীগুলোকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) বাম গণতান্ত্রিক জোটের ছয় দলের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন(ইসি) অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আলী নেওয়াজের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এর আগে নির্বাচন ভবনের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ কিংবা জনগণের মতামত না নিয়েই জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনি ব্যয় সীমা বাড়ানো, ‘না’ ভোট সীমিতকরণসহ বিভিন্ন সংশোধনী আনা হয়েছে—যা সাধারণ মানুষের প্রার্থী হওয়ার অধিকারকে সীমিত করে।
জোটের দাবিগুলো হলো-
১. জামানত ও নির্বাচনি ব্যয় বৃদ্ধিসহ আরপিওর অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করতে হবে। সকলের ভোট দেওয়া ও প্রার্থী হওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২. জামানত ৫ হাজার টাকা, নির্বাচনি ব্যয় ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৩. কালো টাকা, পেশিশক্তি, সাম্প্রদায়িক ও প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
8. নির্বাচনে পোস্টার, লিফলেট, প্রার্থীদের পরিচিতি সভাসহ নির্বাচনি ব্যয় কমিশনকে বহন করতে হবে।
৫. শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে নয় সকল আসনেই ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করতে হবে।
৬. আইসিটি আদালতে অভিযুক্ত হলেই প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণার মতো অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করতে হবে।
৭. নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের জন্য অপেক্ষা না করে সুয়োমটো হিসেবে কমিশনকে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. ভোটারদের প্রতিনিধি প্রত্যাহারের বিধান যুক্ত করতে হবে।
৯. উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা পদত্যাগের কমপক্ষে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন করতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করতে হবে।
১০. নির্বাচনি এলাকার শিক্ষক-কর্মকর্তাদেরকে একই এলাকায় পুলিং, প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে অন্য এলাকায় নিয়োগ দিতে হবে।
১১. ডিসি, ইউএনওদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদেরকে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
১২. তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচনে ভোট দান, ফল ঘোষণা ও গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র, তথ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিতদেরকে কমিশনের অধীনে রাখতে হবে।
১৩. ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
১৪. যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রদানকারী ও উসকানি সৃষ্টিকারীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
জোট বলেছে, বর্তমান সংশোধনীগুলো ধনীদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বাড়িয়ে সংসদকে ‘কোটিপতিদের ক্লাবে’ রূপান্তর করবে। পাশাপাশি ‘না’ ভোট সীমিত করাকে তারা অযৌক্তিক ও ভোটারের অধিকারবিরোধী বলে উল্লেখ করেছে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে দ্রুত এসব দাবির বাস্তবায়ন চেয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক