কনকনে শীত, তাপমাত্রার পারদ ১৩ ডিগ্রিতে
দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা পঞ্চগড়ে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত তীব্র হচ্ছে শীতের দাপট। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) তাপমাত্রার পারদ নেমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ। ভোরে কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশা পড়ে। সূর্য উঠলেও তাপমাত্রা বাড়ে খুব ধীরে ধীরে, ফলে সকালজুড়েই থাকে শীত।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহজুড়ে তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। গতকাল রোববার ১২ দশমিক ৬, আগের দিন শনিবার ১৪ দশমিক ৭, গত শুক্রবার ১৪ দশমিক ৯, বৃহস্পতিবার ১৩ দশমিক ৯, বুধবার ১৪ দশমিক ৩, মঙ্গলবার ১৪ দশমিক ৬ ও সোমবার ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : বৃষ্টি নিয়ে ৫ দিনের পূর্বাভাসে যা জানাল আবহাওয়া অফিস
শীত জেঁকে বসায় জনস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। হাসপাতালে বাড়ছে সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। সদর হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে আসা গৃহবধূ রোজিনা বেগম বলেন, ‘দিনে গরম আবার রাতে বেশি শীত—এই পরিবর্তনটা ছোট বাচ্চারা সামলাতে পারে না। তাই চিকিৎসার জন্য ছুটে আসতে হলো।’
স্থানীয়রা জানান, দিনে রোদ থাকায় শীতের তীব্রতা খুব একটা বোঝা না গেলেও সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যায়। রিকশাচালক হামিদুল রহমান বলেন, ‘বিকেল পর্যন্ত ভালোই থাকে, কিন্তু রাতে আর ভোরে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। তারপরও পেটে ভাত জোটাতে কাজ করতেই হয়।’
বালুশ্রমিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বালু তুলতে নদীতে নামতে হয়। পানি এমন ঠান্ডা, পা দিলেই মনে হয় বরফের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। তবুও কাজ না করলে সংসার চলবে না।’
আরও পড়ুন : আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘রাত বাড়লেই শীতের তীব্রতা বাড়ে। সকালে সূর্য উঠলে তাপমাত্রা দ্রুত ওপরে ওঠে। আজ ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। মাসের শেষ দিকে হালকা শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।’
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইমুজ্জামান বলেন, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে। বেসরকারি উদ্যোগেও সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।

ফাহিম হাসান, পঞ্চগড় (সদর-আটোয়ারী-বোদা)