ধান কাটা প্রতিযোগিতায় জমে উঠল নবান্ন উৎসব
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বেংডম গ্রামের পূর্ব মাঠে আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন, নজিপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও এনজিও ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো নবান্ন উৎসব।
ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ছিল ধান কাটা প্রতিযোগিতা। জাতীয় সংগীত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় এই জমজমাট প্রতিযোগিতা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ৮১ জন কৃষক ও কৃষাণী এতে অংশগ্রহণ করেন। কে কাকে পেছনে ফেলে দ্রুত ও পরিচ্ছন্নভাবে ধান কাটতে পারেন, তা দেখতে ধানক্ষেতের পাশে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ।
প্রতিযোগিতায় দ্রুত ও পরিচ্ছন্নভাবে ধান কাটার জন্য ৯ জন কৃষাণ-কৃষাণীকে পুরস্কৃত করা হয়। ধান কাটা শেষে মাঠে বসেই অংশগ্রহণকারী কৃষক-কৃষাণী এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ একসঙ্গে নবান্নের ঐতিহ্যবাহী খাবার গ্রহণ করেন।
দীর্ঘদিন পর মাঠে ধান কাটতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কৃষাণী হাছিনা খাতুন। তিনি বলেন, সবাই একসাথে ধান কেটে মাঠে বসেই নবান্নের খাবার খাচ্ছি। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত।
সাংবাদিক রবিউল ইসলাম বাঙালির ঐতিহ্য নবান্ন উৎসবের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, নবান্ন উৎসব কৃষকদের জীবন থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। তিনি বলেন, বাঙালির জীবনযাত্রা, উৎসব-ঐতিহ্য আর কৃষিকেন্দ্রিক সংস্কৃতির মূলে যে একটি উৎসব জ্বলজ্বল করে এসেছে শত বছর ধরে, সেটি হলো নবান্ন। নবান্ন হারিয়ে গেলে হারিয়ে যাবে বাঙালির কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতির শেকড়। তাই আমাদের সবার দায়িত্ব নবান্নকে বাঁচানো, কৃষকের উৎসবকে ফিরিয়ে আনা। কারণ কৃষকই বাঁচলে, কৃষিই টিকলে, বাঙালির ঐতিহ্যও টিকে থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলীমুজ্জামান মিলন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশিষ কুমার দেবনাথ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম, সমাজসেবা কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন, আনসার ও ভিডিবি কর্মকর্তা বুলবুলি খাতুন, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা প্রহ্লাদ কুন্ডু, জাতীয় মহিলা সংস্থা সমন্বয়কারী আমিনুল, হাঙ্গার প্রজেক্টের এলাকা সমন্বয়কারী আসির উদ্দিন, পত্নীতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন আজাদ প্রমুখ।

রবিউল ইসলাম, নওগাঁ (পত্নীতলা-ধামইরহাট)