পতেঙ্গার আদলে সিডিএ গড়ে তুলছে ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের আদলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে বাইরের রিং রোড প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই পার্ক হবে বন্দরনগরীর পরিকল্পিত নতুন বিনোদন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম।
সিডিএ’র চলমান প্রকল্প কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীরে আট দশমিক পাঁচ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এর অংশ হিসেবেই নতুন এই পর্যটন জোন বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। সুবিধাগুলো হলো—হাঁটার পথ ও সাইকেল লেন, বসার বেঞ্চ ও গ্যালারি, শিশুদের খেলার জায়গা, ফুট ওভার ব্রিজ ও গাড়ি পার্কিং সুবিধা।
সিডিএ কর্মকর্তারা জানান, বন্দরনগরীর বিপুল জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নদীর পাড়ে নির্মিত একটি স্লুইস গেটের পাশে রোড স্লোপে দোতলা বিশিষ্ট কিছু ছোট স্থাপনা তৈরি করা হবে। এসব স্থাপনার নিচতলায় থাকবে শৌচাগার এবং উপরতলায় থাকবে ফুড জোন, যেখান থেকে দর্শনার্থীরা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
সাড়ে ৮ কিলোমিটার সড়ক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রাজিব দাশ জানান, ‘প্রায় পাঁচ মাস আগে পর্যটন অঞ্চল উন্নয়নের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে কর্ণফুলী নদীর আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠবে আবাসন, বাণিজ্য ও পর্যটনশিল্প। পাল্টে যাবে বাকলিয়া, চান্দগাঁও ও মোহরা এলাকার দৃশ্যপট।’ তিনি আরও বলেন, শাহ আমানত সেতু থেকে বলিরহাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে এবং সেখানে পর্যটকবান্ধব রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রকল্প সংলগ্ন হামিদচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বারিক বলেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তুলনামূলকভাবে অনুন্নত এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাসিন্দাদের জীবনমানও উন্নত হবে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, নগরের কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার বিস্তৃত সড়কটির প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৯ শতাংশ। সাড়ে আট কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধের মধ্যে সাত কিলোমিটারের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ছিল দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকা। চতুর্থবার সংশোধনীতে সর্বশেষ ব্যয় দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে প্রায় ২২ কোটি টাকা পর্যটন সুবিধা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নির্মাণ কাজ করছে।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)