রাউজানে বিপুল অস্ত্র-গুলি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬
চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চারটি বিদেশি পিস্তল ও একটি রিভলবারসহ বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার চৌধুরীহাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ি থেকে এসব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে ওই বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন অভিযানে মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, বিএনপি কর্মী আব্দুল হাকিম হত্যার ঘটনায় সম্প্রতি পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- আবদুল্লাহ খোকন, মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, মুহাম্মদ মারুফ ও মুহাম্মদ সাকলাইন। তাদের কাছ থেকে একনলা বন্দুক ও এলজি উদ্ধার হয়। ওই আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে নোয়াপাড়া এলাকা থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. সাকিব (২০) ও মো. শাহেদ (২৫)।
আবদুল হাকিম হত্যার আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই চৌধুরী হাটের আইয়ুব আলীর বাড়ি থেকে এসব অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশি বিবরণে জানা যায়, অভিযানে পিস্তল-রিভলবার ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ৪২ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১৯ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, শটগানের ১৬ রাউন্ড কার্তুজ, সাতটি খালি ম্যাগাজিন, একটি রকেট ফ্লেয়ার, দুটি রামদা এবং ৫০টি ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা। এছাড়া ৯৬ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে একটি পুকুর সেচে একটি চায়নিজ রাইফেল, একটি শটগান ও সাতটি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মাত্র ২০০ মিটার দূরে একটি প্রাইভেট কারে থাকা আবদুল হাকিমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি রাউজানে নিজের খামার থেকে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছিলেন। মোটরসাইকেলে আসা ওই অস্ত্রধারীদের গুলিতে আবদুল হাকিমের গাড়িটির চালক মুহাম্মদ ইসমাইলও (৩৮) আহত হন। হাকিমের শরীরে ১০টি গুলির আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। এছাড়া গাড়িতে ২২টি গুলির চিহ্ন ছিল এবং গাড়ির সামনের দুটি চাকাও ফুটো হয়ে যায়। ঘটনার দুদিন পর আবদুল হাকিমের স্ত্রী তাসফিয়া আলম বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর রাতে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পাঁচজন আহত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে রাউজান উপজেলায় ১৭টি হত্যাকাণ্ড ও একাধিকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। যার প্রেক্ষিতে অস্ত্র উদ্ধার ও আসামি ধরতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তৎপর হয়েছে।

কামরুল সবুজ, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা (হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাউজান)