বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়কের নামফলক ভাঙা, এলাকাবাসীর ক্ষোভ
দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী ২৮ অক্টোবর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। তবে তার স্মৃতিবিজড়িত যুদ্ধক্ষেত্র মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে নির্মিত সড়কের নামফলকটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ৪ নম্বর সেক্টরে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে এক সম্মুখ যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করেন।
শাহাদাত বরণের পর তার সহযোদ্ধারা তাৎক্ষণিকভাবে তার দেহাবশেষ ভারতের অভ্যন্তরে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আমপাশা নামক স্থানে সমাহিত করেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালে সেই দেহাবশেষ বাংলাদেশে এনে ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাধিস্থ করা হয়।
বাংলাদেশের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের একজন হামিদুর রহমানের আদি নিবাস ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় হলেও, তার স্মৃতিবিজড়িত শাহাদাত বরণের স্থান হলো কমলগঞ্জের ধলই সীমান্ত। তার স্মরণে সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে এবং একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক’ নামে।
তবে দুঃখজনকভাবে, স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী, ওই সড়কের পাশে থাকা নামফলকটি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহিদ ভেঙে সেটির ওপরে নিজের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করেন। এরপর থেকে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নামফলকটি আর পুনঃস্থাপন করা হয়নি। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলো, তাদের নামফলক কেনো ভেঙে ধ্বংস করা হলো?
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তার নামে যে সড়কটি রয়েছে, সেখানে দ্রুতই পুনরায় নামফলক স্থাপন করা হবে।

আহাদ মিয়া, মৌলভীবাজার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ)