উত্তরে প্রখর খরতাপে জনজীবন অতিষ্ঠ
উত্তরের জেলাগুলোতে প্রখর খরতাপ দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি-বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই রংপুরসহ আশপাশের এলাকার প্রকৃতি রুক্ষ হয়ে উঠেছে। ভাদ্রের তালপাকা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে আকাশে মেঘ ভেসে বেড়ালেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না উত্তরের জেলাগুলোতে।
এমন গরমে বাসার বাইরে শিশুদের অযথা না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গরমে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২২১ জন শিশু।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গরমে অসুস্থ হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভর্তি আছেন ২২১ জন।’ রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে, বিভাগের অন্য ৮ জেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালে গরমে অসুস্থ হয়ে ভর্তি আছেন আরও ২৮৬ জন শিশু।
তবে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে ঝড়ো বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর নগরী ঘুরে দেখা গেছে, খরতাপের কারণে নগরীর প্রধান সড়কগুলো—স্টেশন রোড, জিএল রায় রোড, সেন্ট্রাল রোডসহ বিভিন্ন সড়কে জনসমাগম একেবারেই কম। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
রোদের তাপে সবাই একটু ছায়ার জন্য ব্যাকুল। অনেকে মসজিদে নামাজ শেষে মেঝেতে শুয়ে পড়ছেন ক্লান্তি কাটাতে। ডাব, কোমল পানীয় ও ঠান্ডা খাবারের কেনাবেচা বেড়েছে। প্রকৃতির রুদ্ররূপে চলাফেরা ও কাজকর্ম করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছায়ায় দাঁড়িয়েও শরীর থেকে ঘাম ঝরছে।
সড়কের পাশে পান দোকানি আব্দুল মালেক বলেন, ‘রোদ আর গরমের কারণে লোকজন অনেক কম। ফলে বেচাবিক্রিও কমে গেছে।’
রিকশাচালক হামিদ মিয়া বলেন, ‘নিচ থেকে আসছে সড়কের তাপ, আর ওপর থেকে সূর্যের তাপ—দুইয়ে মিলে জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমন গরমে সড়কে টিকে থাকা মুশকিল।’
এদিকে গরমের প্রভাবে কোল্ড ড্রিংকস, জুস ও স্যালাইনের বিক্রি বেড়েছে। দুপুরের রাস্তাঘাট ফাঁকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ক্রেতার সমাগম নেই বললেই চলে। রংপুরে শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার দুপুর ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, ‘তাপমাত্রা বাড়লেও দুই-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)