‘অধ্যবসায় থাকলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকেও সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো যায়’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার লাল মাটির গোপীনাথপুর গ্রামের মেয়ে মোছা. আঞ্জুমান আরা স্বর্ণালীর সফলতার গল্প শোনাব আজ। এমনিতেই বাংলাদেশে নারীদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে নানান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এরমধ্যে যদি হয় প্রত্যন্ত অঞ্চলের, তাহলেতো কথাই নেই। তবুও সব বাধা পেরিয়ে স্বপ্নের জুডিসিয়াল পরীক্ষায় সফল হয়েছেন স্বর্ণালী। সম্প্রতি প্রকাশিত ১৭তম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় ৫৫তম মেধাক্রমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।
স্বর্ণালীর বাবা মৃত রুহুল আমিন ও মা রুমানা ইয়াছমিন। তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরুটা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর গ্রামের শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। পরবর্তীতে নিজ গ্রামের গোপীনাথপুর আলহাজ্ব শাহ আলম কলেজ থেকে ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়াশোনার সুযোগ হয় তার। ক্লাস নাইন থেকেই তাঁর প্রবল ইচ্ছে ছিল আইন নিয়ে পড়াশোনার। উচ্চ মাধ্যমিকের পর প্রথমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হয়েও আইন নিয়ে পড়ার জন্য সেটি বাতিল করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ বেছে নেন তিনি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে থাকা অবস্থায় বিয়ে হয় স্বর্ণালীর। স্বামীর অনুপ্রেরণা ও বাবা-মায়ের দোয়ায় বিজেএস পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। এর আগে ১৬তম বিজেএস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন স্বর্ণালী। ওইবার সুযোগ না পেলেও এবার ঠিকই অধ্যবসায় দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
এবারের জুডিসিয়াল লিখিত পরীক্ষার সময় হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন স্বর্ণালীর বাবা। তবুও দৃঢ় মনোবল ও প্রবল ইচ্ছেশক্তি নিয়ে এগিয়ে যান তিনি।
সফলতার বিষয়ে মোছা. আঞ্জুমান আরা স্বর্ণালী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার সফলতার পেছনে বাবা-মা, স্বামীসহ পরিবারের প্রত্যেকের অবদান আছে। বিশেষ করে, আমার কঠিন অধ্যবসায় আমাকে পৌঁছে দিয়েছে স্বপ্নের জুডিসিয়ারিতে। আমার স্বপ্নের ডানা ছিল আমার বাবা-মা। নারীদের আমি এটাই বলব, আপনার চেষ্টা ও কঠিন অধ্যবসায় থাকলে গ্রাম কিংবা শহর বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকেও পৌঁছে যেতে পারবেন সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায়।’

সাইদুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া (আখাউড়া-কসবা)