গাজীপুরে অনার স্মার্টফোন কারখানা উদ্বোধন করেছে স্মার্ট, তৈরি হবে সনি ইলেকট্রনিক্সের পণ্যও
গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কে দেশের প্রথম অনার স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড। ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এই কারখানায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে সংযোজন করা হচ্ছে অনারের এক্স৬সি মডেলটি।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব কারখানাটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, স্মার্ট টেকনোলজিস এবং অনার গ্লোবালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে সংযোজন শুরু হলেও অনার এক্স৬সি মডেলটির দাম আগের বৈধ আমদানিকৃত সেটের সমান-১৪,৯৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্মার্ট টেকনোলজিস জানায়, প্রাথমিকভাবে ১৫,০০০ ইউনিট এক্স৬সি ফোন সংযোজন করা হয়েছে। কারখানাটি সম্পূর্ণরূপে চালু হলে দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ৬০,০০০ ইউনিটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, প্ল্যান্টে এখন পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এখানে সনি ইলেকট্রনিক্সেরও পণ্য তৈরি হচ্ছে। শুরুতে শুধু অনার ফোন সংযোজন করা হলেও ছয় মাস পর পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে যাব। তিনি জানান, পূর্ণ সক্ষমতায় চালু হলে এই কারখানায় ৫০০ জনের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বর্তমানে একটি প্রোডাকশন লাইন সক্রিয় রয়েছে এবং আগামী কয়েক মাসে আরও লাইন চালু করা হবে।
অনার কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে সংযোজনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোতে এআই-সমর্থিত অটোমেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে পণ্যের নিখুঁততা ও গুণগত মান আরও স্থিতিশীল হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই প্ল্যান্ট বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ বাড়াতে হবে, দক্ষতার ঘাটতি কমাতে হবে এবং মানসম্মত কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে-স্মার্ট ও অনার তাদের অঙ্গীকার রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ স্মার্টফোন আমদানি রোধে শিগগিরই এনইআইআর ব্যবস্থা চালু হবে এবং স্থানীয় সংযোজকদের সহায়তা দিতে শুল্ক কাঠামো সংশোধন করবে সরকার। তৃতীয় ও চতুর্থ সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে ডেটার দামও কমে আসবে।
এছাড়া আসন্ন সাইবার, ডেটা সুরক্ষা ও ডিজিটাল গভার্নেন্স কাঠামো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং দেশে স্মার্টফোন ব্যবহার ৪০ শতাংশ থেকে ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত করতে সহায়তা করবে।
অনার সাউথইস্ট এশিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং বলেন, এটি শুধু একটি স্থাপনা নয়; এটি বৈশ্বিক দক্ষতা ও স্থানীয় সক্ষমতার মিলন। আমরা এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে দক্ষতা বিকশিত হবে, প্রযুক্তি এগিয়ে যাবে এবং কমিউনিটি সমৃদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বিটিআরসি পরিচালক মো. নূরন্নবী, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়াসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক