দিনাজপুরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, হিম বাতাসে বিপর্যস্ত জনজীবন
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। ডিসেম্বরের শেষভাগে হঠাৎ করে নেমে আসা কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা ও বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে জেলার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শীতের দাপটে জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।
আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায়। হিমেল বাতাস বইতে থাকায় সড়ক, হাটবাজার ও খোলা স্থানে মানুষের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম দেখা গেছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যারা বের হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই ভারী শীতবস্ত্র গায়ে জড়িয়েছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৫ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতিকে অসহনীয় করে তুলছে।
জেলার খানসামা, বীরগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে শীতের কষ্ট সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। ভোরের প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষজন কাজে বের হতে পারছেন না। এতে তাদের দৈনন্দিন আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
খানসামার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে সূর্যের মুখই দেখা যাচ্ছে না, শুধু ঠান্ডা বাতাস। এই শীতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই মুশকিল।’
ঘাটপার এলাকার বাসিন্দা মজনু আলম বলেন, ‘আজকে যে বাতাস বইছে, তাতে কাজে যেতে মন চায় না। খুব কষ্ট হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে জলীয় বাষ্প বা কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সূর্যের আলোর প্রখরতা কম থাকবে। আগামী দু–তিন দিন দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত বা সামান্য ওঠানামা করতে পারে। বৃষ্টির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।’
তোফাজ্জল হোসেন আরও জানান, ২৩ ডিসেম্বরের পর থেকে রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে পারে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে জেলার কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ অথবা শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মাসুদ রানা, দিনাজপুর (বীরগঞ্জ-খানসামা)