শূন্য থেকে শৃঙ্গে—অদম্য নারী সম্মাননা পেলেন কোহিনূর আক্তার
নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর পালিত হয় রোকেয়া দিবস। রোকেয়া দিবসে আজ মঙ্গলবার অদম্য নারী সম্মাননা পেয়েছেন কোহিনূর আক্তার। তিনি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা মিলনায়তনে আয়োজিত ‘আমিই রোকেয়া’-শীর্ষক অনুষ্ঠানে ‘সফল জননী’ ক্যাটাগরিতে কোহিনূর আক্তারের হাতে সম্মাননা তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নার্গিস সুলতানা। দীর্ঘ ৩২ বছর সম্মানের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছেন কোহিনূর আক্তার।
চার সন্তানের জননী কোহিনূর আক্তার। তিন মেয়ের প্রত্যেকে ডাক্তার। বড় মেয়ে কামরুন নাহার সুলতানা বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও সরকারি মেডিকেল অফিসার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত আছে। মেজো মেয়ে আয়েশা খাইরুন নাহান সদ্য এমবিবিএস শেষ করেছেন এবং ছোট মেয়ে সাবিকুন নাহার মেডিকেলে অধ্যয়নরত। একমাত্র ছেলে কামরুল হাসান চৌধুরী একজন সফল ব্যবসায়ী।
সফল জননী সম্মাননা পেয়ে কোহিনূর আক্তার বলেন, ‘আমার বিয়ে হয় ১৯৮৩ সালে। চার বছরের ব্যবধানে দুজন সন্তান জন্ম নেয়। আমি সিদ্ধান্ত নিই পড়াশোনা শুরু করব আবার। পরবর্তী এসএসসি, এইচএসসি ও বিএ সম্পন্ন করি। ১৯৯৩ সালে সহকারি শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাত্রা শুরু হয়। সেই সময় মেয়েদের শিক্ষকতার বাইরে যাওয়ার সুযোগ তেমন ছিল না।’
যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিল না। কোহিনূর আক্তার পাশে পেয়েছেন স্বামী কলিম উল্লাহকে। এমন দিনে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে ভোলেননি মানুষ গড়ার এই কারিগর।
কোহিনূর আক্তার বলেন, ‘আমার এই যাত্রায় আমার স্বামী ভীষণ সাপোর্ট দিয়েছেন, সবসময় পাশে ছিলেন। আমার সন্তানেরা আজ বড় হয়েছে, তাদের নিজেদের পরিচয় তৈরি হয়েছে। যারা আমাকে পুরো সময়ে সমর্থন দিয়েছেন, পাশে থেকেছেন, সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
কোহিনূর আক্তার ছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও চারজনের হাতে সম্মাননা তুলে দেন ইউএনও নার্গিস সুলতানা।প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। আপনারা যেন এই উপজেলার নারীদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকতে পারেন।’

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক