৮ কুকুরছানা হত্যা মামলায় নিশির জামিন
পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী নিশি রহমানের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার (৭ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা আমলী আদালত-২ এর বিচারক তরিকুল ইসলাম তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশফেকা জাহান কণিকা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোশফেকা জাহান কণিকা জানান, আজ রোববার আসামির জামিন শুনানীর দিন ধার্য ছিল। বিচারক শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন। এটি জামিনযোগ্য অপরাধ হওয়ায় এবং নারী বিবেচনায় তার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। পরবর্তী হাজিরা তারিখ আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি।
অ্যাডভোকেট কণিকা বলেন, এখন মামলা তদন্ত হবে, তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হবে। তখন আমরা যদি দেখি অভিযোগপত্র বা তদন্ত সঠিকভাবে হয়নি, তখন আমরা না-রাজি আবেদনসহ পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবো। আমরা চাই তদন্ত সঠিকভাবে হোক, এই বিচারের শাস্তি নিশ্চিত হোক।
পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের (পি.এ.ডব্লিউ) স্থানীয় প্রতিনিধি প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী হিসেবে আমরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি। সঠিক বিচারের জন্য আগামীতে এই মামলাটি চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের প্রতিবাদটা হলো নিষ্ঠুরতা বা হিংস্রতার বিরুদ্ধে। ওই আসামির বিরুদ্ধে নয়। নিষ্ঠুরতা ও হিংস্রতার বিরুদ্ধে একটা শাস্তি হলে অনেকেই সতর্ক হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় থাকতো ‘টম’ নামের একটি কুকুর। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। গত সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুরকে।
পরে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান জীবন্ত আটটি কুকুর ছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে রোববার রাতের কোনো এক সময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। পরদিন সোমবার সকালে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় কুকুরছানাগুলোর মরদেহ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে নিশি রহমানকে আসামি করে থানায় মামলাটি করেন। পরে রাতেই ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালত সেদিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

পলাশ হোসেন, পাবনা (সদর-সুজানগর-আটঘরিয়া-আতাইকুলা)