‘শেখ হাসিনা ঢাকার বড় কসাই, তার কর্মকাণ্ড নজরদারিতে’
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোথাও ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে বলে সতর্ক করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা ঢাকার কসাই; আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ। যারা ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ করতে চাইবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। যারা মিছিল করবেন বা মিটিং করবেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস্যকে সে নির্দেশনাই দেওয়া হয়েছে।’
ভারত থেকে হাসিনার দেওয়া বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পাশের দেশে বসে কী করছেন, তা পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। শত শত মানুষকে হত্যা করায় শেখ হাসিনাকে “বুচার অব বেঙ্গল” বলে অভিহিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ—আইসিটিসহ সব জায়গায় নিষিদ্ধ। হাসিনার উসকানিতে যারা মিছিল-মিটিংয়ের মতো কার্যক্রমে অংশ নেবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসিনাকে নানা বিষয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে, এমনকি তিনি জুলাই বিদ্রোহে যোগ দেওয়া মানুষদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন প্রেস সচিব।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবে।
এ বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, রায়টি (হাসিনার বিরুদ্ধে) ঘোষিত হোক। তারপর আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি ভারতের সঙ্গে উত্থাপন করবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি দাবি করেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে হাসিনার অপরাধের সুস্পষ্ট নথি রয়েছে এবং সাংবাদিকদের তা পড়ার অনুরোধ জানান।
গত ৬ অক্টোবর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, এটি একটি ‘বিচারিক আইনি প্রক্রিয়া’ এবং এ বিষয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে ‘আলোচনা ও পরামর্শ’ প্রয়োজন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আমরা আগ্রহী।’
এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা এই মুহূর্তে ‘সংগত নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এক সাংবাদিক জানতে চান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও জাতিসংঘের উদ্দেশে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে যে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে, সরকার এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জবাবে প্রেস সেক্রেটারি আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনি ইউএনডিপিকে প্রশ্ন করবেন। আপনি ইউএনডিপিকে জিজ্ঞেস করবেন।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সেক্রেটারি ফয়েজ আহম্মদ এবং সহকারী প্রেস সেক্রেটারি সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।

ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)