সবাইকে নিয়েই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখতে চাই : শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সবাইকে নিয়েই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখতে চাই। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান প্রায় ১৫ দিনের দীর্ঘ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। এই সময়ে তিনি সৌদি আরবে পবিত্র উমরা পালন করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফর করেন।
বিমানবন্দরে জামায়াত আমির জানান, গত মাসের ১৯ তারিখ তিনি উমরা করার উদ্দেশ্যে দেশ থেকে বের হন। উমরা সম্পন্ন করার পর ২২ তারিখ তিনি আমেরিকার জেএফকে এয়ারপোর্টে পৌঁছান। সেখানে আট দিনব্যাপী তিনি বিভিন্ন স্তরে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি নিউ ইয়র্ক, বাফেলো, মিসিগান ও ওয়াশিংটন ডিসি—যুক্তরাষ্ট্রের এই চারটি শহর সফর করেন। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। প্রথমত, দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, নিষ্পেষণ ও ফ্যাসিবাদী শাসনের পর বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে এবং মুক্তির এই সংগ্রামে দেশবাসীর সঙ্গে প্রবাসীরাও সমানতালে লড়াই করেছেন, তাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন : ‘শরিকদের জন্য’ যে ৬৩ আসন ফাঁকা রাখল বিএনপি
জামায়াতের আমির জানান, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি জামায়াত সবার আগে তুলেছিল এবং এই দাবি তারা ছেড়ে দেননি। তিনি সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান তারা এই প্রথমবারের মতো ব্যাপক ভিত্তিতে প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে সেখানে কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। ভোটার হওয়ার জন্য অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং যে সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে তা প্রোপারলি ফাংশন না করায় আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে তার দাবি হলো, কমপক্ষে আরও ১৫ দিন এই সময় বর্ধিত করা হোক এবং যে জটিলতাগুলো রয়েছে, সেগুলো সহজ করে প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড যথেষ্ট এবং পাশাপাশি একটা ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকলে আর কিছুরই প্রয়োজন হয় না। অথচ সেখানে পানির বিল, কারেন্টের বিল, হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়ার মতো কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে ১০ থেকে ২০ বছর যাবৎ দেশের বাইরে আছেন, তাদের এগুলো ব্যবহারও হয় না, বিল দেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। তিনি এই শর্তগুলো সহজ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন : বিএনপির মনোনয়ন পাননি যে হেভিওয়েট নেতারা
সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান জানান, তিনি আমির নির্বাচিত হননি বরং সহকর্মীরা তার ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। বিএনপি ও জামায়াতের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি ২৩৭টি আসনে তালিকা প্রকাশ করলেও জানিয়েছে এটি চূড়ান্ত নয়। তিনি জানান, জামায়াত এক বছর আগেই আঞ্চলিকভাবে তালিকা জানিয়ে দিয়েছে এবং দেশ ও জাতির স্বার্থে সবাইকে ধারণ করে চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে সময় বেঁধে দিয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, সরকার অনুরোধ করেছে যে এক সপ্তাহ সময়ের ভিতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা কনসেনসাসে পৌঁছাতে পারে, সেটা সরকারের জন্য ভালো। তিনি বলেন, জামায়াতই সবার আগে আলোচনায় বসে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবাইকে নিয়েই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখতে চাই।

নিজস্ব প্রতিবেদক