ফরিদপুরে দুই এনজিও কর্মী হত্যায় চার জনের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রায় ২০ বছর আগে খ্রিস্টান মিশনারীর দুই এনজিও কর্মী হত্যা মামলায় চারজন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শফিউদ্দীন এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার সাজাপ্রাপ্ত ওই চার আসামি পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে, আদালত পলাতক সাজাপ্রাপ্ত ওই চার আসামির নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিনগত রাতে বোয়ালমারী উপজেলার চর ধোপাপাড়া গ্রামে খুন হন তপন রায় মার্ডি (৩০) ও নিকলাল মার্ডি (৩৫) নামের ওই দুই এনজিও কর্মী। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এই দুই ব্যক্তি একটি মিশনারি সংস্থার মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং তারা চর ধোপাপাড়া গ্রামের শিরগ্রামে বিপুল কুমার বাকচীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
আরও পড়ুন: আজ থেকে ৪৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিনগত রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে আসামিরা তাদের ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক বিপুল কুমার বাগচী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুলতান মাহমুদ ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ওই চার ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: বিপিএলে থাকছে না ফরচুন বরিশাল, আসছে নতুন মালিকানা
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন- আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৫৩), বোয়ালমারী উপজেলার গুণবাহা ইউনিয়নের গুণবাহা গ্রামের বাসিন্দা কামরুল হাসান ওরফে কামরুজ্জামান (৪৫), বোয়ালমারী চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান ওরফে মনির (৪০) ও একই ইউনিয়নের চর ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ (৬০)।
ফরিদপুরের স্পেশাল জজ আদালতের সরকার পক্ষের কৌশলী (পিপি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছিল, টাকার লোভে তারা ওই দুই ব্যক্তিকে হত্যা করেন। এরপর তারা এ মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে যায়। বিলম্ব হলেও এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি এবং রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।

সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর