রাঙামাটিতে বিরল প্রজাতির গোলাপি হাতির মৃত্যু, পাহারায় মা হাতি

রাঙামাটির বরকল উপজেলায় বিরল প্রজাতির গোলাপি হাতি শাবকটির মৃত্যু হয়েছে। মা হাতিসহ বন্য হাতির একটি পাল মৃতদেহটি পাহারা দেওয়ায় গত দুদিন ধরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা শাবকটি উদ্ধার করতে পারছেন না।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয়রা কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভেসে আসা হাতি শাবকটির মৃতদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলেও মৃতদেহের পেছনে সাঁতরে আসা মা হাতিসহ বন্য হাতির একটি দলের কারণে শাবকটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সুবলং রেঞ্জের কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, কাপ্তাই হ্রদে বিরল গোলাপি রঙের হাতির শাবকটির মৃতদেহ ভাসছে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গেলেও হাতির শাবক উদ্ধারে আমরা এর কাছে যেতে পারছি না। কারণ শাবকটির মাসহ বুনো হাতির একটি পাল সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের সরিয়ে দিয়ে আমরা হাতিটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুজ্জামান শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, গতকাল থেকে আমরা বন বিভাগের সবাই বুনো হাতি শাবকটি উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। কাপ্তাই হ্রদে ডুবে মারা যাওয়া হাতি শাবকটির পাশের টিলাতেই হাতি শাবকটির মাসহ একটি হাতির দল পাহারা দিচ্ছে। সে কারণে হাতি শাবকটির মৃতদেহ উদ্ধার করা যাচ্ছে না।
বন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, হাতি শাবকটি খাড়া পাহাড় থেকে নামার সময় পা পিছলে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে পড়ে যায়। সেখান থেকে উঠতে না পেরে তার মৃত্যু হয়েছে।
রফিকুজ্জামান জানান, আজ আবারও হাতি শাবকটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। এরপর ভেটেরিনারি সার্জন দিয়ে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসেই পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কাচালংমুখ বনশুল্ক ও পরীক্ষণ ফাঁড়ির আওতাধীন রাঙামাটির বরকল উপজেলার বরুনাছড়ি গ্রামে দেশের প্রথম ও একমাত্র এই গোলাপি হাতি শাবকটিকে প্রথম দেখা গিয়েছিল। আনুমানিক ছয় মাস বয়সি এই শাবকটিকে সেসময় কাপ্তাই হ্রদ সাঁতরে পার হওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা তখন জানিয়েছিলেন, হরমোনজনিত ইস্যু বা জিনগত অস্বাভাবিকতার কারণে হাতির গায়ের রঙে এমন ভিন্নতা আসতে পারে, যা স্বাভাবিক।