জেলেদের জিম্মি করে ৫০ হাজার টাকার চাঁদা দাবি, ১০ হাজার টাকায় মুক্তি

পটুয়াখালীর দশমিনায় দেশীয় অস্ত্রের মুখে জেলেদের জিম্মি করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। পরে ১০ হাজার টাকা চাঁদার বিনিময়ে ওই জেলেদের মুক্তি দেওয়া হয়। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার চর বোরহান ইউনিয়নের পাগলার বাজার এলাকায়।
অভিযুক্ত ছাত্রদলনেতার নাম মো. রেজাউল গাজী। সে চর বোরহান ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।
ভুক্তভোগী জেলেরা সোমবার (২০ অক্টোবর) জানান, গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় চর বোরহান ইউনিয়নের চর শাহজালাল গ্রামের জেলে মো. মাইনুদ্দিন পালোয়ান (৩৫) ধলারচর গ্রামে শ্বশুর বাড়ি থেকে ট্রলার ও জাল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় তার সাথে ফুফাতো ভাই সোহেল মল্লিক (৪০) ও ভাগনে নাইম (১৪) ও জিহাদ (১২) সাথে ছিলেন। ফেরার পথে পাগলার বাজার খালের গোড়ায় চরবোরহান ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. রেজাউল গাজী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ১০-১২ জন লোকজন নিয়ে ট্রলারসহ তাদের আটক করে। পরে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তারা (জেলেরা) দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে ভোর রাতের দিকে ১০ হাজার টাকায় রফাদফায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
ছাত্রদল নেতার চাঁদাবাজির বিচার দাবি ও চাঁদার টাকা ফেরত দাবি করে ভুক্তভোগী মাইনুদ্দিন বলেন, আমি সাগরের জেলে। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার আগে জাল-সাবার শ্বশুর বাড়ি রেখে আসছিলাম। মেরামত করার জন্য জাল শ্বশুর বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসার সময় ছাত্রদলনেতা রেজাউল আমাদের আটক করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা গরিব জেলে। এত টাকা দিতে পারব না বললে মারধর করে ফোন নিয়ে যায়। টাকার জন্য সারারাত জিম্মি করে রাখে। পরে ভোর রাতে আমার এক আত্মীয় গিয়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে আমাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
এর আগেও অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে তরমুজের ট্রলার আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। ওই ট্রলারে থাকা আরেক ভুক্তভোগী জেলে সোহেল মল্লিক বলেন, আমরা নদীতে মাছ ধরতে যাইনি। মাইনুদ্দিনের শ্বশুর বাড়িতে রেখে আসা জাল আনতে গিয়েছিলাম। পথে এই ঘটনা ঘটায় ছাত্রদলের রেজাউল।
চাঁদার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনা স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল মৃধা বলেন, রাতে তিনটার দিকে সোহেল মল্লিক আমাকে ফোন করে ঘটনায় জানায়। পরে আমি গিয়ে ১০ হাজার দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনি।

এবিষয়ে ওই অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বক্তব্যের জন্য একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী তানজিল আহম্মেদ রিডেন বলেন, ছাত্রদলের পদপদবীতে থেকে এমন কর্মকাণ্ড করার সুযোগ নেই। এমন সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলীম বলেন, এমন কোনো ঘটনা শুনিনি এবং কেউ অভিযোগও দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।