কম খরচে মাছের পুষ্টিকর খাদ্য তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন মারজান
 
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার জিয়ল গ্রামের মৎস্যচাষি আবদুল্লাহ ইবনে আজিজ মারজান (৪৫) কম খরচে পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছের খাবার তৈরি করে জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। নিজের খামারের মাছের জন্য তৈরি করা এই খাদ্য প্রতিদিন তিনি অন্তত ১০ জন স্থানীয় মৎস্যচাষিকেও সরবরাহ করছেন, যারা এতে বেশ লাভবান হচ্ছেন।
বাজারে প্রতি কেজি মাছের খাদ্যের দাম যেখানে ৮০ টাকা, সেখানে মারজান নিজেই তা তৈরি করছেন মাত্র ৫০ টাকায়। এই খাদ্য টাটকা ও মানসম্মত হওয়ায় মাছ দ্রুত বড় হচ্ছে এবং প্রজনন ক্ষমতাও বাড়ছে। চাষিরা বলছেন, এতে করে খরচ কমে আসছে এবং লাভ বাড়ছে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে মারজানকে সহযোগিতা করেছে পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। ২০২৪ সালের শুরুতে মারজান বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমীর কৃষি কর্মকর্তা শাহারিয়া হোসেনের পরামর্শে দেড় লাখ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ফিস ফিড তৈরির মেশিন কেনেন এবং মৌসুমীর কাছ থেকে খাদ্য তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে নিজেই মাছের খাবার তৈরি করা শুরু করেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আজিজ মারজান জানান, খাদ্যের উপাদান সঠিক ও টাটকা হওয়ায় মাছের গ্রোথ ভালো হয়। বাজারের তুলনায় প্রতি কেজিতে ২০-২৫ টাকা সাশ্রয় হয়। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে তিনি পাঁচ বিঘা পুকুর থেকে দুই লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তিনটি পুকুরে মাছ চাষ করছেন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
স্থানীয় মৎস্যচাষি আব্দুস ছালাম ও ওবায়দুল হক বলেন, বাজারে যেখানে প্রতি কেজির দাম ৮০-৮৫ টাকা, সেখানে মারজান দিচ্ছেন ৫০ টাকায় টাটকা খাদ্য। বাজারের খাদ্য কয়েক মাস আগে তৈরি হওয়ায় গুণগত মান কমে যায়, মাছের বৃদ্ধিও ধীরে হয়। কিন্তু মারজানের প্রতিদিন তৈরি খাদ্য ব্যবহার করে মাছ দ্রুত বড় হচ্ছে, ফলে দ্রুত বাজারজাত করে বেশি লাভ পাওয়া যাচ্ছে।
মৌসুমীর মৎস্য কর্মকর্তা শাহারিয়া হোসেন বলেন, পিকেএসএফের সহযোগিতায় মারজানকে ফিস ফিড মেশিন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাজারের ফিডে কতটুকু প্রোটিন বা ভিটামিন আছে, তা বলা যায় না। অনেক সময় খাদ্যের গুণগত মানও নষ্ট হয়। কিন্তু মারজানের খাদ্যে সঠিক মাত্রায় পুষ্টি উপাদান দেওয়া হয় এবং তা প্রতিদিন তৈরি হয় বলে গুণগত মান বজায় থাকে।
শাহারিয়া হোসেন আরও জানান, জেলার মধ্যে প্রথমবারের মতো এই প্রকল্পটি চালু হওয়ায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে মাছ চাষ বাড়বে, আয় বাড়বে এবং বেকারত্বও কমবে।

 
                   বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)
                                                  বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)
               
 
 
 
